আগামী পাঁচ বছরের জন্য জোটের শীর্ষ পদগুলোতে কারা থাকবেন, এ নিয়ে কোনো চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রধানদের আলোচনা শেষ হয়েছে। এ নিয়ে আগামী সপ্তাহে আরেকটি শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে মধ্যডান ও ডানপন্থী জাতীয়তাবাদীদের উত্থানের পর এই বৈঠকটি ছিল প্রথম। নির্বাচনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের দলের ভরাডুবি হয়েছে।
ব্রাসেলসে নৈশভোজে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা আলোচনা করেন। ইউরোপীয় কমিশনের নির্বাহী সংস্থা পরিচালনার দায়িত্ব, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিত্ব ও পররাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব কাকে দেওয়া উচিত, এটিই ছিল আলোচনার মূল বিষয়। ধারণা করা হচ্ছিল, এই বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে জার্মানির উরসুলা ভন ডেয়ার লায়েন, কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে সাবেক পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা ও শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী কায়া কালাসকে মনোনীত করা হবে।
তবে নৈশভোজের পর ইউরোপীয় কাউন্সিলের বর্তমান সভাপতি চার্লস মিশেল জানান, এই সিদ্ধান্ত নিতে তাদের আরো সময় প্রয়োজন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটি একটি ভালো আলোচনা ছিল, (আলোচনা) সঠিক পথেই আছে বলে আমি মনে করি। কিন্তু আজ রাতে কোনো চুক্তি হয়নি।’
মিশেল আরো জানান, ইউরোপের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই পদগুলো নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছে এবং চুক্তিতে পৌঁছনোর জন্য আরো কাজ করতে হবে। প্রস্তাবিত নাম নিয়ে বিস্তারিত জানাননি মিশেল।
এদিকে ভন ডেয়ার লায়েন আবারও ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার মধ্যডান ইউরোপীয় পিপলস পার্টি (ইপিপি) জুনের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় দল হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
২৭ দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের ১৩ জনই ইউরোপে ইপিপিকে সমর্থন করা দলগুলো থেকে এসেছেন। ফ্রান্স ও জার্মানির সমর্থন পাওয়ায় মনোনীত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তার কোনো সমস্যা হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ফ্রান্স অবশ্য ভন ডেয়ার লায়েনের বিকল্প কাউকে বেছে নেওয়ার কথা বিবেচনা করেছিল।
কিন্তু ইউরোপের নির্বাচনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর দল খারাপ ফল করায় ৩০ জুন ম্যাখোঁ আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে এই পরিস্থিতিতে তার সরকার ইইউ অস্থিতিশীল হয় এমন কোনো কিছু না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভন ডেয়ার লায়েনকেই সমর্থন করেছে।
ভন ডেয়ার লায়েনের সঙ্গে প্রবীণ সমাজতন্ত্রী কস্তা ও উদারপন্থী কালাস নিয়োগ পেলে ইউরোপের রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক ভারসাম্য নিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন অনেকে। ২৭ ও ২৮ জুন আয়োজিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: