গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচারে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। বিগত ৮ মাস ধরে ইসরায়েলি নৃশংসতায় ওই উপত্যকায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্তত ৩৬ হাজার ৮০১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে মাত্র সাতজন জিম্মিকে মুক্ত করতে পেরেছে ইসরায়েল। অথচ আলোচনার মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছিল শতাধিক জিম্মি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং প্রফেসর কেনেথ রথ নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলার বিষয় নিয়ে আল-জাজিরার সাথে কথা বলেছিলেন।
তিনি বলেন, চার বন্দীকে উদ্ধার করতে গিয়ে শনিবার গাজার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এ শিবিরে ব্যাপক হামলা চালিয়ে অন্তত ২১০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তিনি আরও বলেন, এই উদ্ধার অভিযানের অর্থ হল ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কারণে মোট সাতজন বন্দী জীবিত মুক্তি পেয়েছে। যেখানে আলোচনার মাধ্যমে এক শ’রও বেশি মুক্তি পেয়েছে।
কেনেথ বলেন, এ থেকে বুঝা যায় আলোচনার মাধ্যমে সব বন্দীদের মুক্ত করা সম্ভব। কিন্তু নেতানিয়াহু হামাসের সাথে আলোচনা শেষ করার জন্য একটি বড় বাধা, কারণ তিনি একটি দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চান না।
কেনেথ আরও বলেন, “নেতানিয়াহুর একটি চিরকালের যুদ্ধ দরকার।”
তিনি বলেন, একবার যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে ৭ অক্টোবরের গোয়েন্দা ব্যর্থতার জন্য তাকে রাজনৈতিক হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। এজন্য তিনি যুদ্ধবিরতি চান না।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিনের নিপীড়ন, নির্যাতন, হত্যা ও দখলদারির প্রতিবাদে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল কর্তৃক অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আকস্মিক এক অভিযান চালায়। সে সময়ে তারা প্রায় এক হাজার ১৭০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসেন। এখনও হামাসের কাছে ১২১ জন বন্দী হিসেবে আটক রয়েছে।
এদিকে, ৭ অক্টোবর থেকেই ইসরায়েল গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে, যা এখনও চলছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত এ হামলায় ৩৬ হাজার ৮০১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। সূত্র: আল-জাজিরা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: