ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিরপরাধ মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনীর এ হামলায় হাজার হাজার নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন। গাজায় এমন অপরাধের জন্য ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ।
শনিবার (০৮ জুন) আন্তর্জাতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের তালিকায় অপরাধী হিসেবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ আরদান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, শুক্রবার (০৭ জুন) জাতিসংঘ থেকে এক প্রজ্ঞাপন পেয়েছেন গিলাদ। এতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের এমন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত লজ্জাজনক উল্লেখ করে তিনি এতে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাটজ বলেন, জাতিসংঘের এমন পদক্ষেপের কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ জন্য জাতিসংঘকে পরিণাম ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক বাহিনী। এরপরও মাত্র একজন ব্যক্তির সিদ্ধান্তে ইসরায়েলকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর তিনি হলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতিসংঘ ইসরায়েলকে নয়, বরং নিজেকেই ইতিহাসের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিখ বলেন, জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তিনি তাকে বার্ষিক ‘চিল্ড্রেন ইন আর্মড কনফ্লিক্ট’ প্রতিবেদনে ইসরায়েলকে তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি জানান। বিষয়টির গোপনীয়তা যাতে ফাঁস না হয় সেজন্য এমনটা করা হয়েছে। আগামী ১৪ জুন বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তোলা হবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত গাজার ৩৬ হাজার ৭৩১ জন নিহত হয়েছেন। উপত্যকায় নিহতের মধ্যে ৬৯ থেকে ৫২ শতাংশ নারী ও শিশু রয়েছেন বলে গত মাসে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ইসরায়েলের দাবি, হামাসের মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা হামাস পরিচালিত সরকারি মিডিয়া অফিসের পরিবর্তে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের ওপর নির্ভর করে এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: