মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সব সদস্যরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ দল। ইউরোপের তিন দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এক সপ্তাহ পর ৩ জুন, সোমবার এই আহ্বান জানানো হয়েছে। খবর জেরুজালেম পোস্ট।
বিশেষজ্ঞ দলের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়, দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনের জনগণ তাদের মুক্তি ও স্বাধীনতার দাবিতে যে ন্যায্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, এই স্বীকৃতি তা আরও গতিশীল করবে। এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে তাদের অধিকার ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। একইঙ্গে এটি হবে তাদের সংগ্রামের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। জাতিসংঘের এই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলটিতে সংস্থাটির ফিলিস্তিন অঞ্চলের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা অ্যালবানিজও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ফিলিস্তিনসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের পূর্বশর্ত হলো রাফায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান বন্ধ করাসহ গাজায় শিগগিরই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যে নিরাপত্তাহীনতা, সহিংসতার মুখোমুখী হচ্ছে- তা থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পথ হলো দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান। আর ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান সেই দ্বিরাষ্ট্র সমাধানেরই প্রাথমিক ধাপ। তবে জাতিংঘ বিশেষজ্ঞদের সে আহ্বানে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার বিরোধিতা করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি গাজা যুদ্ধ বন্ধ করতে প্রস্তুত নন। ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে আলোচনার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাইডেনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ভুল আখ্যা দিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, প্রেসিডেন্ট যে রূপরেখা পেশ করেছেন তা আংশিক। জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে সাময়িকভাবে যুদ্ধ বন্ধ করা হবে। আমরা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার সুবিধার্থে ৪২ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ করতে পারি। কিন্তু আমরা আমাদের বিজয়ের লক্ষ্য পুরো না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ করব না। এমনকি তিনি জিম্মি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসাবে কতজন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেও অস্বীকৃতি জানান।
বাইডেনের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে হামাস জানিয়েছিল, তারা গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির যে কোনো প্রস্তাবে ইতিবাচকভাবে সাড়া দেবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাও বাইডেনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। এমনকি ইসরায়েলের বিরোধী দলগুলোও বাইডেনের প্রস্তাবকে বাস্তবসম্মত বলে আখ্যা দিয়েছে। কিন্তু নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভা এ প্রস্তাব মানতে নারাজ। এমনকি মন্ত্রিসভার দুইজন সদস্য হুমকি দিয়েছে, এ প্রস্তাব মানা হলে, তারা সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেবেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: