সৌদি যুবরাজ ও ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান নিষ্ঠুরতার মাত্রা জানতে পেরে হতবিহবল হয়ে পড়েছেন বিশ্ববাসী। সম্প্রতি এমবিএসের ভয়ংকর এই চেহারা ফাঁস করে দিয়েছেন সৌদি আরবেরই সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
মোহাম্মদ বিন সালমানের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের নাম নিওম। ১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রকল্পটি দ্য লাইন নামেও পরিচিত। এটি বাস্তবায়নের পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাকে মেরে ফেলার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সৌদি আরবের নিরাপত্তা বাহিনীকে। আর এই ক্ষমতা দিয়েছিলেন স্বয়ং এমবিএস নিজে। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
কর্নেল রাবিহ আলেনেজি নামে সৌদি আরবের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দ্য লাইন বা নিওম প্রকল্পের জমি গ্রহণের জন্য কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে প্রয়োজনে তাকে মেরে ফেলার নির্দেশ ছিল। এই নির্দেশের পর একজন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যাও করা হয়েছে।
কর্নেল আলেনেজি গত বছর যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে চলে যান। মূলত সেখানে থাকার কারণেই তিনি এ কথা প্রকাশ করতে পেরেছেন। এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, দ্য লাইন থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি গ্রাম আল-খুরাইবাহের বাসিন্দাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়। এই গ্রামটির বাসিন্দারা হুওয়াইতাত গোত্রের সদস্য।
আলেনেজি জানান, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের এক আদেশে বলা হয়েছিল, হুওয়াইতাত গোত্রটি বিদ্রোহীদের নিয়ে গঠিত এবং যদি কেউ দ্য লাইনের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করে, তাহলে তাকে হত্যা করতে হবে। তিনি বলেন, এটি মূলত জমি অধিগ্রহণের জন্য মানুষ মারার ছাড়পত্র ছিল। তবে আলেনেজি শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে নিজে সেই মিশনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন।
সৌদি আরবের সাবেক এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, দ্য লাইন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করা থেকে বাধা দেন আব্দুল রহিম আল-হুওয়াইতি নামের এক ব্যক্তি। তার একদিন পরই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং গ্রামটি উচ্ছেদ করা হয়। এই ঘটনায় সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, হুওয়াইতি গোত্রটি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলি ছুড়লে জবাবে তারাও পাল্টা গুলি করে। আর সেই গুলিতেই মারা যান আব্দুল রহিম।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: