আগামীকাল শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক এই দেশে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে লোকসভার ৫৪৩ আসনে মোট সাত দফায় ভোটগ্রহণ করা হবে। পরে আগামী ৪ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা হবে।
এ নির্বাচনে প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেবেন, যা ইউরোপের সব দেশ মিলে যে জনসংখ্যা, তার চেয়েও বেশি।
নির্বাচনে মূল লড়াই হচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইনডিয়া’ জোটের মধ্যে।
ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের মূল দল ভারতীয় জনতা পার্টি এককভাবে এবার ৩৭০ আসনের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে। আর জোটগতভাবে তাদের লক্ষ্য ৪০০ আসন।
বেশিরভাগ জনমত জরিপে ফের বিজেপি জোটেরই ক্ষমতায় আসার আভাস মিলেছে।
গত ১৬ মার্চ ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে লোকসভা নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেন।
তপশিল অনুযায়ী, মোট সাত দফায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দফার ভোটের দিন ১৯ এপ্রিল, এরপর ২৬ এপ্রিল, ৭ মে, ১৩ মে, ২০ মে, ২৫ মে এবং ১ জুন সবশেষ দফার ভোট হবে।
৪ জুন ভোটের ফল প্রকাশ করা হবে। লোকসভা আসন কম এমন কয়েকটি রাজ্যে মাত্র এক দিনেই ভোট হবে। কিন্তু যেসব রাজ্যে আসন বেশি সেখানে কয়েক দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ ভারতে ২ হাজার ৬০০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর রয়েছে নিজস্ব প্রতীক—যেমন কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রতীক পদ্ম, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের হাত আর অন্যান্য দলের হাতি থেকে শুরু করে বাইসাইকেল, চিরুনি বা তীর নানাবিধ প্রতীক রয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশে নির্বাচনী প্রতীক ভোটের মাঠে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা ভারতের বেলায় সত্য। দেশটির এক-তৃতীয়াংশ ভোটারই নিরক্ষর, তাই প্রতীক দেখেই তারা কে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী তা বুঝতে পারেন।
এবার ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। যা ইউরোপের সব দেশ মিলে যে জনসংখ্যা, তার চেয়েও বেশি।
তারা সাড়ে ১০ লাখ ভোটকেন্দ্রে ৫৫ লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট দেবেন।
অনেক ভোটকেন্দ্র হবে অতি-দুর্গম। কোনোগুলো সুউচ্চ হিমালয়ের তুষারঘেরা পর্বতের কোলে, আবার গা পোড়ানো উষ্ণতার রাজস্থানের মরুর বুকেও চলবে ভোটগ্রহণ।
এমনকি ভারত মহাসাগরে খুবই কম জনসংখ্যার দ্বীপপুঞ্জগুলোও বাদ যাবে না। নির্বাচন পরিচালনার জন্য দেড় কোটি নির্বাচনকর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করবে নির্বাচন কমিশন। এই কর্মীরা নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে পাড়ি দেবেন শীতল হিমবাহ ও মরুভূমি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: