অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের ওয়েস্টফিল্ড শপিং মলে স্থানীয় সময় আজ শনিবার দুপুর তিনটায় ছুরি হাতে হামলা চালিয়েছেন এক ব্যক্তি। এমন অবস্থায় ভয় পেয়ে মল থেকে বেরিয়ে পড়েন কাতারে কাতারে মানুষ। বেরোতে বেরোতে হতবিহ্বল এক নারী বলছিলেন, এটা পুরোই পাগলামি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হামলাকারীসহ নিহত হয়েছেন সাতজন এবং আহত হয়েছেন শিশুসহ আরও অনেকে। এ ঘটনা নিজের চোখে দেখা অনেকেই তুলে ধরেছেন হামলার ভয়াবহ সব চিত্র।
যেমন হামলার সময় দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘটনাস্থলেই ছিলেন একজন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, তাঁর সামনেই লোকজনকে নির্বিচার ছুরিকাঘাত করছিলেন এক হামলাকারী। ওই ব্যক্তির ভাষ্য, ‘এটা ছিল স্রেফ হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কেন এই হামলা হয়েছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ জড়িত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। হামলার সময় ঘটনাস্থলে থাকা এক নারী পুলিশ কর্মকর্তাকেও ছুরিকাঘাত করতে যান হামলাকারী। ওই কর্মকর্তা গুলি চালালে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেন, লোকজন চিৎকার করতে করতে ছোটাছুটি করছিলেন। সবাই আত্মরক্ষার জন্য ওই পুলিশ কর্মকর্তার পেছনে অবস্থান নেন। তখন হামলাকারী বড় একটি ছুরি নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকেন। এরপরই গুলি চালান ওই কর্মকর্তা।
হামলা হওয়া ওই শপিং মলের অবস্থান বন্ডি সৈকতের কাছে। মলটি বেশ জনপ্রিয়। অন্যান্য শনিবারের মতো আজও সেখানে ছিল শত শত মানুষের ভিড়। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিল শিশু-কিশোর।
আজ মলটিতে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন জনি নামের ৩৩ বছরের এক তরুণ। একসময় তিনি তীব্র হট্টগোল শুনতে পান। পেছনে ফিরে দেখেন যে এক নারী ও তাঁর শিশুসন্তানের ওপর হামলা হয়েছে। ছুরির আঘাতে ওই নারী আহত হয়েছিলেন। এতে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ বুঝতে পারছিলেন না যে কী করবেন।
জনি বলেন, ওই নারী কোনোমতে কাছের একটি দোকানের ভেতর ঢুকে পড়েন। এর পরপরই দোকানের কর্মচারীরা দরজা বন্ধ করে দেন। সেখানে থাকা কয়েকজন ক্রেতা ওই নারীর শরীর থেকে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করেন। তাঁর অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। তবে তাঁর সন্তানের শরীরে আঘাত ততটা বেশি নয়।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘দেখতে পেলাম যে সবাই আমাদের দিকে ছুটে আসছেন। এরপর একটি গুলির শব্দ শুনলাম। আমার স্বামী আমাদের নিয়ে একটি দোকানে ঢুকে পড়েছিলেন। সেখানে থাকা এক নারী দোকানের দরজাগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করছিলেন। তবে সামনের দরজাটি বন্ধ করতে পারেননি। তাই আমরা দোকানের ভেতর অফিসকক্ষে ঢুকে পড়লাম। সেটি চারদিক দিয়ে বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ এসে আমাদের সেখান থেকে বের করে।’
এদিকে এ হামলা পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, দুঃখজনকভাবে একাধিক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। যাঁরা এ হামলার শিকার হয়েছেন, তাঁদের এবং তাঁদের প্রিয়জনদের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সব নাগরিকের সহমর্মিতা রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: