পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় পাঁচ চীনা নাগরিক ও একজন পাকিস্তানি গাড়িচালক নিহত হয়েছেন। ২৬ মার্চ মঙ্গলবার ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের দাসুতে চীনা প্রকৌশলীদের গাড়িতে এ হামলা হয়। নিহতরা পাকিস্তানের একটি বাঁধ প্রকল্পে কাজ করছিলেন বলে জানায় পুলিশ।
আঞ্চলিক পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ আলী গান্দাপুর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আত্মঘাতী বোমা হামলায় পাঁচ চীনা নাগরিক ও তাঁদের পাকিস্তানি গাড়িচালক নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ এশীয় এ দেশটিতে চীনা স্বার্থের ওপর এটি এ নিয়ে তৃতীয় হামলা। এর আগে বেলুচিস্তান প্রদেশের একটি বিমানঘাঁটি ও কৌশলগত বন্দরে হামলা হয়েছিল। পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এ প্রদেশটিতে অবকাঠামো প্রকল্পে কয়েক শ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন।
দাসু একটি প্রধান বাঁধ এলাকা এবং আগেও এখানে হামলা হয়েছে। ২০২১ সালে এক বাসে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯ চীনা নাগরিকসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়।
পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরের (সিপিইসি) বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের অধীনে পাকিস্তানে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে বেইজিং। এ প্রকল্পগুলোতে কাজ করছেন চীনা প্রকৌশলীরা।
মঙ্গলবারের হামলায় কেউ এখনো দায় স্বীকার করেনি। এমনকি ২০২১ সালের হামলার সময়ও কেউ দায় স্বীকার করেনি। পাকিস্তানে এ মুহূর্তে দুটি বিদ্রোহী দল সক্রিয়—একটি ইসলামপন্থী এবং অন্যটি জাতিগত সশস্ত্র বাহিনী; যারা বিচ্ছিন্নতাবাদী।
খনিজসমৃদ্ধ বেলুচিস্তান থেকে বেইজিংকে বিতাড়িত করতে চায় জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীরা। তবে তারা সাধারণত পাকিস্তানের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে থাকে, যা আজকের ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে। দেশটির উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের যে এলাকায় গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে, সেখানে মূলত ইসলামপন্থীদের তৎপরতা রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, খাইবার পাখতুনখাওয়া পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
পুলিশের পৃথক এক সূত্র বলছে, হামলার শিকার গাড়িতে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চীনের গেঝোবা গ্রুপ কোম্পানির (সিজিজিসি) কর্মীরা ছিলেন। তাঁরা দাসু হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্পে কাজ করছিলেন। ২০২১ সালে এই একই প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। ওই হামলার পর কয়েক মাস ধরে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়।
এ ঘটনায় ইসলামাবাদে অবস্থিত চীনের দূতাবাস তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এক সপ্তাহ পরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বেইজিং সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন শেষে জোট সরকার গঠনের পর এটিই হবে শরিফের প্রথম চীন সফর।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: