মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুক হামলার ঘটনায় ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের দায় স্বীকার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। দেশটির ভেতরে গত দুই দশকের মধ্যে চালানো সবচেয়ে মারাত্মক হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৩৭ জন নিহত এবং ১৮২ জন আহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
সোভিয়েত যুগের রক ব্যান্ড পিকনিকের ‘অ্যাফ্রেইড অব নাথিং’ কনসার্ট শুরুর ঠিক আগে গত ২২ মার্চ শুক্রবার রাতে চারজন অস্ত্রধারী ক্রোকাস সিটি হলে ঢুকে পড়ে গুলি চালায়। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে এই চারজনকেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস এই চারজনকে মস্কোর বাসমানি জেলা আদালতে আলাদা আলাদা প্রকোষ্ঠে রেখেছে। এদের মধ্যে অন্তত একজন তাজিকিস্তানের নাগরিক বলে জানা গেছে।
ইসলামিক স্টেট হামলার দায় স্বীকার করেছে। জঙ্গি গোষ্ঠীর এই দাবি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রও প্রকাশ্যে বলেছে যে, তারা বিশ্বাস করে যে আইএস এই হামলা করেছে। জঙ্গি গোষ্ঠীটি একটি ফুটেজও প্রকাশ করে সেটিকে হামলার ফুটেজ বলে দাবি করেছে।
আমেরিকান কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা এই মাসের শুরুতে আসন্ন হামলা সম্পর্কে রুশ গোয়েন্দাদের সতর্ক করেছিল।
কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রকাশ্যে হামলাকারীদের ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীর বলে উল্লেখ করেননি। বরং, হামলাকারীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন যে, তারা ইউক্রেনে পালানোর চেষ্টা করছিল।
পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের কিছু লোক হামলাকারীদের রাশিয়া থেকে সীমান্ত অতিক্রম করতে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। তবে ইউক্রেন এই হামলায় কোনো ধরনের ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করেছে। কনসার্ট হলে হামলার দায় ইউক্রেনের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুতিনকে অভিযুক্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাওয়া ইসলামিক স্টেট আইএস কনসার্ট হলে হামলা করেছে—যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবিকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। কমসোমলস্কায়া প্রাভদা সংবাদপত্রের জন্য একটি নিবন্ধে তিনি বলেছেন, ‘হোয়াইট হাউসের কাছে একটি প্রশ্ন—আপনারা কি নিশ্চিত যে এটি আইএসআইএসের কাজ? এ নিয়ে আপনাদের কি আরেকটু ভাবা উচিত না?’
জাখারোভা আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভে তাদের অবস্থান লুকানোর জন্য ইসলামিক স্টেটের একটি ভয়ংকর গল্প ছড়াচ্ছে। পাঠকদের মনে করিয়ে দিচ্ছি, ১৯৮০’র দশকে সোভিয়েত বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করা ‘মুজাহিদিন’ যোদ্ধাদের সমর্থন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
দুই আমেরিকান কর্মকর্তা গত শুক্রবার বলেছিলেন যে, ইসলামিক স্টেটের দায় স্বীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: