গাজায় ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর ফের গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা সিটিতে এ হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন এবং ১৫০ জন আহত হয়েছে। আগের দিন ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হামলায় আরও ৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। খবর আল জাজিরার।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার উত্তর সিটির একটি গোলচত্বরে ত্রাণের ট্রাক আসার অপেক্ষায় ছিল কয়েক শত ফিলিস্তিনি। তাদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণে অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও দেড়শ জনেরও বেশি মানুষ।
এর আগে বৃহস্পতিবার গাজার মধ্যবর্তী আল-নুসেইরাত আশ্রয় শিবিরের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা লোকজনের ওপর এমন নৃশংস হামলা চালানো ইসরায়েলি বাহিনীর অভাবনীয় পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যা।
তবে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি পুরোপুরিই ‘মিথ্যা’।
গাজা উপত্যকায় পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৩১ হাজার ৩৪১ জনের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৭৩ হাজারের বেশি। হতাহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
অব্যাহত বিমান হামলায় গাজা ভূখণ্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে।
প্রতিনিয়ত বিমান হামলা ও অবরোধের মধ্যে থাকা গাজাবাসী খাবারের অভাবে দুর্ভিক্ষের চরমদ্বারে উপস্থিত হয়েছে। এরইমধ্যে শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে ক্ষুধায়।
খাদ্যের জন্য বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে, কাড়াকাড়ি করছে খাবারের জন্য। এইসব ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর ফের গুলি ও বিমান থেকে বোমা ফেলছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গাজা সিটির কাছে ত্রাণের জন্য অপেক্ষারতদের ভিড়ে গুলি চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। ওইদিন গুলিতে ১১৪ জনের মতো ফিলিস্তিনি নিহত এবং পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়েছিল।
তবে ওই ঘটনার জন্য ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ ত্রাণের জন্য বেপরোয়া লোকজনের হুড়োহুড়ি ও ট্রাকের নিচে চাপাপড়াকে দায়ী করেছিল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: