হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রধান কারাগারে গ্যাং সদস্যদের হামলায় অন্তত ১২ জন মারা গেছেন। আর কারাগার থেকে পালিয়েছেন কয়েক হাজার কয়েদি। এ ঘটনার পর হাইতি সরকার দেশটিতে জরুরি অবস্থা এবং রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে।
৩ মার্চ রোববার বার্তা সংস্থা এএফপির এক সংবাদদাতা জানান, তিনি কারাগারটিতে প্রায় এক ডজন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন।
মানবাধিকার সংস্থা ন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর ডিফেন্স অব হিউম্যান রাইটসের কর্মকর্তা পিয়েরে এস্পেরেন্স বলেন, ‘আমরা অনেক বন্দীর মৃতদেহ পেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, গ্যাং সদস্যদের হামলার পর ন্যাশনাল পেনিটেনশিয়ারি নামক কারাগারে মাত্র প্রায় ১০০ জন কয়েদি ছিল। সেখানে আগে ছিল আনুমানিক ৩,৮০০ জন কয়েদি। গত শনিবার রাতভর কারাগারটিতে অভিযান চালায় গ্যাং সদস্যরা।
গত কয়েক দশক ধরেই দারিদ্র্য, সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতি। ২০২১ সালে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়সিকে হত্যা করা হয়। এরপর দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ে আরও বড় আকারের বিশৃঙ্খলা।
হাইতির সশস্ত্র গ্যাংগুলো বেশ শক্তিশালী। রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশির ভাগই নিয়ন্ত্রণ করে এসব গ্যাং।
৩ মার্চ রোববার পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রধান কারাগার ন্যাশনাল পেনিটেনশিয়ারিতে যান এএফপির একজন সংবাদদাতা। তিনি কেবল ডজনখানেক মরদেহই পাননি, আরও অনেককেই আহত অবস্থায় পড়ে থাকতেও দেখেছেন। বুলেট অথবা গোলার আঘাতে আহত হয়েছেন তারা।
সেই সংবাদদাতা দেখতে পান যে, কারাগারটির মূল ফটক খোলাই ছিল। আর সেখানে আর খুব বেশি কয়েদি অবশিষ্ট নেই।
একটি বিবৃতিতে হাইতি সরকার বলেছে যে, পুলিশ সেই ন্যাশনাল পেনিটেনশিয়ারি এবং ক্রোইক্স ডেস বুকেটস নামক আরেকটি কারাগারে সশস্ত্র গ্যাংদের আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল। এই হামলায় কারাগারের কর্মী ও কয়েদিদের মধ্যে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পিয়েরে এস্পেরেন্স বলেন, ক্রোইক্স ডেস বুকেটস কারাগার থেকে কয়জন কয়েদি পালিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
এএফপি বলেছে, হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্যই গ্যাংগুলো গত বৃহস্পতিবার থেকে পোর্ট-অ-প্রিন্সে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। হেনরি গত শুক্রবার কেনিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক পুলিশ সহায়তা মিশনের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন। নাইরোবি এ ব্যাপারে তাকে সমর্থন দিতে রাজি হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: