করোনা টিকার দু'টি বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শনাক্ত

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:১৬

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


মানুষের স্নায়ুতে করোনা টিকার জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। যদিও টিকার এ প্রভাব খুব বিরল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। বিশ্বজুড়ে বহুল ব্যবহৃত ফাইজার, মডার্না ও অ্যাস্ট্রোজেনেকা ভ্যাকসিনের ওপর চালানো হয়েছে এ গবেষণা।

কোরোনা নিয়ে এখন পর্যন্ত করা সবচেয়ে বড় গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে স্নায়বিক ব্যাধি এবং মেরুদণ্ডের প্রদাহের মতো বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি ব্রিটেনের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শনাক্ত করতে অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের ৯ কোটি ৯ লাখের বেশি মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা।

তারা জানান, বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলেও করোনা টিকার গ্রহণের ফলে এই ভাইরাসের আক্রান্ত হাওয়ার ঝুঁকি অনেক কমেছে।

গবেষণায় এমআরএনএ ভ্যাকসিন এবং মায়োকার্ডাইটিস (হৃৎপিণ্ডের পেশির প্রদাহ) এবং পেরিকার্ডাইটিস (হৃৎপিণ্ডের পাতলা থলির ফুলে যাওয়া) -এর বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো একটি উচ্চ স্তরের নির্ভুলতার সাথে নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়াও গুইলেন-বারে সিনড্রোম (যেখানে ইমিউন সিস্টেম স্নায়ু আক্রমণ করে) এবং সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস (মস্তিষ্কে এক ধরনের রক্ত জমাট বাঁধা) অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের সাথে যুক্ত বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শনাক্ত করা গেছে।

এদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণে মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে প্রদাহ এবং ফুলে যাওয়ার মতো বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শনাক্ত করা হয়েছে।

গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্কের সহ-পরিচালক অধ্যপক জিম বাটারি বলেন, এই অনুসন্ধান গবেষকদের স্বাধীনভাবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এবার প্রায় ৬৮ লাখ অস্ট্রেলিয়ান যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের একটি পৃথক ডেটাসেট বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়েছে।

গবেষণায় শুধু এনসেফালোমাইলাইটিসকে একটি বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেই নিশ্চিত করা হয়নি, বরং বিপুল পরিমাণ অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণে নতুন বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শনাক্ত করা গেছে, যা ট্রান্সভার্স মাইলাইটিস বা মেরুদণ্ডের প্রদাহ নামে পরিচিত।

গবেষকরা বলছেন, প্রতি ১০ লাখ ডোজে ০ দশমিক ৭৮টি ক্ষেত্রে এনসেফালোমাইলাইটিস এবং ট্রান্সভার্স মাইলাইটিসের জন্য ১ দশমিক ৮২টি ক্ষেত্রে অত্যন্ত কম ঝুঁকি রয়েছে।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জুলি লিস্ক বলেন, এসব সমস্যা শনাক্ত করা এবং সমাধান করা একটি শক্তিশালী টিকাদান কর্মসূচির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: