পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমের বেলুচিস্তান প্রদেশে জোড়া বিস্ফোরণে অন্তত ২৫ জন নিহত এবং ৪০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নির্বাচনের আগের দিন ৭ ফেব্রুয়ারি, বুধবার প্রদেশের দুটি জেলায় এসব ঘটনা ঘটেছে। খবর জিও নিউজের।
প্রথম ঘটনায় ১৫ জনের মতো মানুষ নিহত হয়েছেন। বুধবার প্রদেশের পিশিন জেলার নোকান্দি এলাকায় এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ের বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে। স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর নাম আসফান্দিয়ার খান কাকার। বিস্ফোরণের সময় তিনি কার্যালয়ে ছিলেন না।
তহসিল হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. হাবিব জিও নিউজকে বলেন, আহত ব্যক্তিদের এই হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া মরদেহগুলো এখানে আনা হয়েছে।
ইতোমধ্যে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) বিস্ফোরণের বিষয়টি নিজেদের নজরে নিয়েছে। এ ছাড়া বেলুচিস্তানের মুখ্য সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন তলব করেছেন।
অন্যদিকে বুধবার বেলুচিস্তানে আরেকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এবার কিলা সাইফুল্লাহ জেলায় জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজলের (জেইউআই-এফ) নির্বাচনী অফিসের কাছে এই বিস্ফোরণ হয়েছে। এই ঘটনায় ১০ জনের মতো মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেক মানুষ।
আগামীকাল ৮ ফেব্রয়ারি, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ভোট হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকার বেছে নেবেন ১২ কোটি ৮০ লাখ পাকিস্তানি ভোটার। এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আইনসভার জন্য ৫ হাজার ১২১ জন এবং প্রাদেশিক আইনসভার জন্য ১২ হাজার ৬৯৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে দেশের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার দল পিটিআইকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। চার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ইমরানকে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে পিটিআই ও ইমরান-সমর্থকদের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে এসব সাজা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কারাগারে বন্দি তিনি। ফলে নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ভোটে কারচুপি নিয়ে আশঙ্কা ও উদ্বেগ তত বাড়ছে।
নির্বাচনী হাওয়া বইলেও পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোটেও ভালো না। ২০১৫ সালের পর সদ্য বিদায়ী ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এমনকি নির্বাচন পূর্ববর্তী সহিংসতায় বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। দেশের এমন ভয়াবহ নিরাপত্তা পরিস্থিতি কথা উল্লেখ করে নির্বাচন পেছাতে সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রস্তাব পর্যন্ত পাস হয়েছে। তবে এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে বৃহস্পতিবারই ভোটের আয়োজন করেছে দেশটির ইসি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: