হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের ১০০তম দিনে দেওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের বিবৃতির নিন্দা করল ফিলিস্তিনের জাতিসংঘ মিশন। মিশনের অভিযোগ, গাজায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর কথা এড়িয়ে শুধু জিম্মিদের নিয়ে একতরফা বার্তা দিয়েছেন ব্লিনকেন। হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে ১০০তম দিনের স্মরণে গত রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে হামাসের হাতে জিম্মি থাকা মানুষের প্রসঙ্গ টানেন ব্লিনকেন।
তিনি বলেন, ১০০ দিনের বন্দিদশা অনেক দীর্ঘ সময়। হামাসের হাতে থাকা আমেরিকানসহ সব জিম্মিকে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থামবে না।
তবে ব্লিনকেনের বার্তায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় ২৪ হাজার মানুষ নিহত হওয়া নিয়ে কোনো শব্দই নেই।
ব্লিনকেনের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘ মিশন গতকাল ১৫ জানুয়ারি, সোমবার তাদের ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে বলেছে, ‘১০০ দিন হয়েছে অথচ প্রায় ২৪ হাজার মানুষের মৃত্যুর কথা একবারও উল্লেখ নেই। যারা এখনো অবৈধ কাজের সহযোগী থাকছেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাননি, তাঁদের ধিক্কার।’
যুদ্ধের ১০০তম দিনে হোয়াইট হাউসের বার্তায়ও গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ এবং লাখ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়নি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর বার্তায় শুধু জিম্মি আর তাঁদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি জনপদে হামাসের হামলায় এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়। ওই দিন প্রায় ২৫০ জন জিম্মিকে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
গত নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ১০৫ জন মুক্তি পেলেও এখনো ১৩২ জন গাজায় জিম্মি আছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, অন্তত ২৫ জিম্মি নিহত হয়েছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
উত্তর গাজায় জরুরি ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলের আশদোদ বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিতে তেল আবিবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের তিন সংস্থা। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডাব্লিউএফপি), ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) যৌথভাবে এক বিবৃতিতে জানায়, অবরুদ্ধ গাজাবাসীর কাছে খাবার ও অন্যান্য উপকরণ সরবরাহের জন্য নতুন পথ খোলা প্রয়োজন। এ জন্য উত্তর গাজা সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত বন্দরটি ত্রাণ সংস্থাগুলোর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন বলে জানায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর রাতভর হামলায় ৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বহু মানুষ আহত হয়েছে। চার মাস ধরে চলা এই লড়াইয়ে গাজায় নিহতের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। মন্ত্রণালয় জানায়, খান ইউনিস, রাফাহ শহরসহ গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায় ইসরায়েল।
সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: