জাপানে ফুমিও কিশিদার নেতৃত্বাধীন সরকারের চার মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন। ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটির (এলডিপি) অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিকে কেন্দ্র জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা যখন আস্থার সংকটে ভুগছেন, তখনই এমন পদত্যাগের ঘটনা ঘটল।
দলের আর্থিক হিসাব থেকে ৫০ কোটি ইয়েন লাপাত্তা হয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে মূলত সংকটের শুরু। দলের এক তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানের জন্য টিকিট বিক্রির কোটা অতিক্রম করে যেসব নেতা অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি করেছেন, তাদের সাথে এ অর্থগুলো লেনদেন হয়েছে অভিযোগ আছে। অর্থাৎ এক একজন নেতাকে টিকিট বিক্রির জন্য যে সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল, তার বেশি যারা টিকিট বিক্রি করেছেন, সেই বাড়তি অর্থগুলো তাদের দিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এ ঘটনায় তদন্তের অংশ হিসেবে কৌঁসুলিরা দলীয় কার্যালয়গুলোয় তল্লাশি চালাবেন এবং আইনপ্রণেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। এ দুর্নীতিজনিত কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে আজ প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো তিনিসহ চার মন্ত্রীর পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করেছেন।
মাতসুনো বলেন, তিনি ছাড়াও অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা, আন্তর্জাতিকবিষয়ক মন্ত্রী জুনজি সুজুকি এবং কৃষিমন্ত্রী ইচিরো মিয়াশিতাও তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
মাতসুনো জাপান সরকারের প্রধান মুখপাত্র হিসেবেও নিযুক্ত। তিনি বলেছেন, আরো পাঁচ উপমন্ত্রী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা মিচিকো উয়েনোও দায়িত্ব ছাড়ছেন।
নিশিমুরা সাংবাদিকদের বলেন,‘যে রাজনৈতিক তহবিলকে কেন্দ্র করে সরকারের প্রতি জনগণের অনাস্থা তৈরি হয়েছে, সেটির কারণে আমার চারপাশেও সন্দেহের বীজ দানা বাঁধছে। এ ব্যাপারে যেহেতু তদন্ত চলছে, আমিও চাই সবকিছু ঠিকঠাক হোক।’
সম্প্রতি কিশিদা সাংবাদিকদের বলেছেন, যে অভিযোগগুলো উঠেছে, সেগুলোর মীমাংসা করার জন্য তিনি সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবেন এবং এলডিপির প্রতি জনগণের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করবেন।
আশাহি শিম্বুনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে দুই কোটি ইয়েনের বেশি পরিমাণ অর্থের হিসাব না দিতে পারায় কিশিদা নিজেও সন্দেহের মধ্যে আছেন।
জনমত জরিপে দেখা গেছে, ২০১২ সালে জাপানে এলডিপি দল ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে এ পর্যন্ত যারা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তার মধ্যে জনপ্রিয়তার দিক থেকে কিশিদার অবস্থান সবচেয়ে নড়বড়ে। মূল্যস্ফীতি নিয়ে কিশিদা সরকারের প্রতি ভোটাররা ক্ষুব্ধ। তা ছাড়া আগের দুর্নীতির ঘটনাগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে না পারায় কিশিদার প্রতি তারা অসন্তুষ্ট।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত কিশিদার মেয়াদ আছে। তবে গুঞ্জন আছে, আগামী বছর এলডিপিতে নেতৃত্বসংক্রান্ত ভোটাভুটির আগে তিনি আগাম নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: