ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে আটকা প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা, গ্রহণে অস্বীকৃতি স্থানীয়দের

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৪:২৯

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

পশ্চিম ইন্দোনেশিয়ার একটি সমুদ্রসৈকতে আটকা পড়েছে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গতকাল ৯ ডিসেম্বর রোববার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণ করবে না বলে জানালে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় সময় শনিবার রাত ৩টায় নৌকায় করে উপকূলে এসে পৌঁছায় প্রায় ২০০ শরণার্থী। রোহিঙ্গাদের নৌকা যেখানে পৌঁছেছে, সেই আচেহ প্রদেশের পিডি সোশ্যাল এজেন্সির প্রধান মুসলিম বলেছেন, শরণার্থীদের নৌকা যেখানে থেমেছে সেখানেই রাখা হবে। এবার আর সরকার তাদের জন্য কোনো খরচ বহন করবে না। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার শরণার্থীদের তাঁবু বা অন্য কোনো মৌলিক চাহিদা প্রদানের দায়িত্ব নেবে না। পিডি নামক স্থানটিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার মতো জায়গা নেই বলেও জানান মুসলিম।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যার প্রধান লক্ষ্যবস্তুই ছিল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, যার বেশির ভাগই মুসলিম। এই গণহত্যা শুরুর পর প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার জন্য সমুদ্রে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল যাত্রা করে।

এএফপির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, শরণার্থীদের সমুদ্রসৈকতে জড়ো হতে দেখা গেছে। মায়েরা তাঁদের সন্তানদের কোলে নিয়ে আছেন। শিশুদের বেশির ভাগেরই পর্যাপ্ত জামাকাপড় ছিল না। অন্যরা সমুদ্রসৈকতে শুয়ে আছে। দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার পর বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করছে।

গত মাসেও ১ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা এই উপকূলে এসেছিল। এবার আর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং বাসিন্দারা রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে রাজি নয়। তাদের এবার সমুদ্রে ঠেলে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

গত বুধবার আচেহর সাবাং দ্বীপে প্রায় ১৫০ জন বিক্ষোভকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীকে অন্যত্র পাঠানোর দাবি জানিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।

প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো গত শুক্রবার বলেছেন যে, স্থানীয় সম্প্রদায়ের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে উদ্বাস্তুদের জন্য অস্থায়ী ত্রাণ সরবরাহ করা হবে। বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গার তাঁদের দেশে পৌঁছানোর পেছনে মানব পাচারকারী নেটওয়ার্ক জড়িত আছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয় ইন্দোনেশিয়া। তাই শরণার্থীদের গ্রহণ করতেও তারা বাধ্য নয়। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোও রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। সংখ্যালঘু গোষ্ঠীটির যাওয়ার তাই খুব বেশি জায়গাও নেই।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: