পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ২০১৭ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে যারা ছিলেন এবং পাকিস্তানের ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন।
৮ ডিসেম্বর শুক্রবার লাহোরে পিএমএল-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ এবং অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। নিজের এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলা সম্পর্কে নওয়াজ বলেন, যারা ভুয়া মামলা দায়ের করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পিএমএল-এন সুপ্রিমো বলেন, আমাদের দলের নেতাদের মিথ্যা মামলায় জেলে রাখা হয়েছে এবং সাত বছর পর আমাকে ন্যায়বিচার দেওয়া হচ্ছে। পানামা পেপারস ফাঁসের পর তার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি এ কথা বলেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তাকে আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছিল সুপ্রিমকোর্ট। জাতীয় জবাবদিহিতা ব্যুরোকে (এনএবি) তার বিরুদ্ধে রেফারেন্স দায়ের করারও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পরবর্তীতে, জবাবদিহিতা আদালত ২০১৮ সালে অ্যাভেনফিল্ড এবং আল-আজিজা রেফারেন্সে তাকে সাজা দেয়। তবে গত মাসে অ্যাভেনফিল্ড রেফারেন্সে তার সাজা বাতিল করে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।
আজ শুক্রবারের ভাষণে নওয়াজ শরিফ বলেন, জাতির সেবা করতে চায় পিএমএল-এন, কিন্তু একই সঙ্গে দলটির নেতাদের নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানান এই নেতা।
চলতি বছরের অক্টোবরে লন্ডনে চার বছরের স্ব-নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে নওয়াজ বলেন, তিনি শুধু সরকার গঠনের জন্য দেশে ফিরে আসেননি, বরং দুর্নীতি ও রাজনৈতিক নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চান।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসারের কথিত অডিও কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে নওয়াজ বলেন, সাবেক শীর্ষ বিচারপতিকে বলতে শোনা যেতে পারে যে, ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে তৎকালীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের জন্য পথ প্রশস্ত করতে তিনিসহ পিএমএল-এন নেতাদের কারাগারে থাকা উচিত।
কারও নাম উল্লেখ না করে নওয়াজ ইমরান খানকে কটাক্ষ করেন এবং পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধে ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের এনএবি রেফারেন্সকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি বলে অভিহিত করেন।
তারা মদিনা রাষ্ট্রের নৈতিকতা ও নীতি সম্পর্কে কিছুই জানে না। পাকিস্তানকে মদিনার মতো কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করার পিটিআই প্রধানের স্লোগানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা কেবল তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা প্রচারের জন্য এটি ব্যবহার করেছে। ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের মামলাটি সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি। এতে কোন সন্দেহ নেই।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: