সুদানে চলমান লড়াইয়ে হাজার হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে আশেপাশের এলাকাতেও তৈরি হচ্ছে মানবিক জরুরি অবস্থা। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, পুরো সাহেল অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। সুদানে যুদ্ধের দ্রুত সমাধানের আশা ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। সৌদি আরবের জেদ্দায় গত সপ্তাহে যুদ্ধরত দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। কিন্তু তাতে যে খুব একটা লাভ হয়নি, খার্তুমে সাম্প্রতিক বিমান হামলাই তার প্রমাণ।
হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ এরই মধ্যে দেশটি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী নানা দেশে পালিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিপর্যয়কর মানবিক সংকট ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। ফ্রিডরিশ এবার্ট ইনস্টিটিউট - এফইএস এর হেনরিক মাইহাক মনে করেন, ‘বর্তমানে সহিংসতা বন্ধ করার বিষয়ে কোনো আঞ্চলিক ঐকমত্য না থাকার ফলে বিষয়টি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।’
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফলকার পের্থেসও সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, সুদানের লড়াইয়ের ফলে ‘সুবিধাবাদী এবং ভাড়াটে যোদ্ধারা’ আকৃষ্ট হচ্ছে।
মাইহাকের মতে, এই দেশগুলোতে এমনিতেই সশস্ত্র নানা গোষ্ঠী সক্রিয়। নতুন অস্ত্রের সরবরাহ সাহেল অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো খারাপ করে তুলবে। তিনি সতর্ক করেছেন, এরই মধ্যে দুটি সংকটাপন্ন অঞ্চল- হর্ন অফ আফ্রিকা এবং সাহেলের পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়বে সুদান যুদ্ধের কারণে।
মাইহাক বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেও সোমালিয়া, সুদান এবং দক্ষিণ সুদানে মানবিক জরুরি অবস্থা ছিল। ত্রাণ তহবিল কম ছিল। ১৫ এপ্রিল থেকে জেনারেল আবদেল-ফাত্তাহ বুরহানের অনুগত সামরিক বাহিনী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল মোহাম্মদ হামদান ডাগালোর ব়্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এর মধ্যে লড়াই চলছে।
তাদের এই আধিপত্য বিস্তারের লড়াই প্রতিবেশী দেশগুলোকেও চাপে ফেলেছে। এই দেশগুলোর বেশ কয়েকটি হয় সামরিক শাসনের অধীনে রয়েছে অথবা অস্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সুদান থেকে হাজার হাজার শরণার্থী সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ সুদান, চাদ বা সেন্ট্রাল আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে চলে যাচ্ছেন। আরো দূরের দেশেও শরণার্থী সংকট ছড়িয়ে যেতে পারে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: