মাত্র চার বছর আগে চীনের উহানে উৎপত্তি হয় করোনাভাইরাসের। এরপর ভাইরাসটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, প্রাণ হারান লাখ লাখ মানুষ। এই মহামারির ক্ষত এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব। আর সেই করোনার রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার চীনের উত্তরাঞ্চলে ‘রহস্যময়’ নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যার শিকার হচ্ছে প্রধানত শিশুরা।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ‘রহস্যময়’ এই নিউমোনিয়া সম্পর্কে বেইজিংয়ের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২২ নভেম্বর, বুধবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘চীনা সরকারের কাছে শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া শ্বাসযন্ত্রের এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে।’
বেশ কয়েক দিন ধরেই চীনে শিশুদের মধ্যে এক ধরনের শ্বাসতন্ত্রের রোগ দেখা দিয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে এই রোগটিকে ‘রহস্যজনক নিউমোনিয়া’ বলে উল্লেখ করেছে চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হেলথ কমিশন।
এছাড়াও চলতি সপ্তাহের শুরুতে অনলাইন মেডিকেল কমিউনিটি ‘প্রোমেড’ রহস্যময় এই নিউমোনিয়ার প্রসঙ্গে ২০১৯ সালে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
প্রোমেড জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত এই ‘রহস্যময়’ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত যেসব রোগী পাওয়া গেছে, তাদের প্রায় সবাই শিশু। চীনের বিভিন্ন শহরে এই রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হলেও রাজধানী বেইজিং এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লিওনিয়াংয়ে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, রীতিমতো প্রাদুর্ভাব পর্যায়ের। প্রসঙ্গত, বেইজিং ও লিওনিয়াংয়ের মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৮০০ কিলোমিটার।
রোগটিকে ‘রহস্যময়’ নিউমোনিয়া বলার কারণ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা যেমন শ্বাসকষ্টে ভোগেন, অজানা এই রোগটিতে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যেও এ উপসর্গের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে নিউমোনিয়ার রোগীদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও কফ ও বুকে ঘড়ঘড় শব্দের মতো উপসর্গ দেখা যায়— আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি।
তবে শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি উচ্চমাত্রার জ্বরের মতো উপসর্গ রয়েছে আক্রান্ত শিশুদের। এছাড়া শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আক্রান্ত প্রত্যেক শিশুর ফুসফুসে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ফোসকা পরিলক্ষিত হয়েছে। জলবসন্ত রোগে মানুষের শরীরে যেমন ফোসকা পড়ে, সেসবের সঙ্গে মিল রয়েছে ফোসকাগুলোর।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: