নেপালের ভূমিকম্পের আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে বিশাল এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে নিহতের সংখ্য আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৩ নভেম্বর, শুক্রবার রাতে জোরালো ভূমিকম্পে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকাও কেঁপে ওঠেছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৪। তবে ভারতে এখন পর্যন্ত হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, ভূমিকম্পের জেরে বহু জায়গার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এই আবহে রাত থেকেই শুরু হয় উদ্ধারকাজ। এখন পর্যন্ত ১২৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, আরো বহু মানুষ এই ভূমিকম্পে আহত। তাদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চলছে চিকিৎসা।
ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ৩২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে নেপালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। কম্পনের উৎসস্থল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ৩৩১ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল। ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়।
এদিকে ভারত সীমান্ত থেকে ভূমিকম্পের উৎসস্থলটি ছিল কাছেই। এই আবহে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডসহ ভারতের অনেক জায়গা সেই কম্পন অনুভূত হয়েছিল। উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগঢ়ের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ২০৮ কিমি, জোশীমঠের দক্ষিণ-পূর্বে ৩১৭ কিমি, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের উত্তর ও উত্তর-পূর্বে ২৫৩ কিমি এবং উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার উত্তরে ২২৭ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল এই কম্পনের উৎসস্থল।
গত এক মাসের মধ্যে নেপালে তিনটি জোরালো ভূমিকম্প হয়েছে। এর আগে গত ২০১৫ সালে নেপালে ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। তাতে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৯ হাজার মানুষের। আহত হয়েছিলেন প্রায় ২২ হাজার মানুষ। গতরাতের ভূমিকম্প যেন নেপালের মনে ২০১৫ সালের সেই ভীতি ঢুকিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে। রাতেই জরুরি ভিত্তিতে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।
নেপালের রুকুম জেলায় বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এদিকে ভূমিকম্পের পরপর জাজারকোট গ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে জানা যায়। ওই গ্রামে বহু মানুষ থাকেন। পরে রাতের দিকে জাজারকোটের জেলা কর্মকর্তা সুরেশ কুমার সুনার জানান, উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। বহু মানুষকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সূত্র : রয়টার্স, হিন্দুস্তান টাইমস এবং অন্যান্য
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: