স্পেন, হংকং ও আফ্রিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে দূতাবাস বন্ধ করতে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। এর ফলে বিশ্বে পিয়ংইয়ংয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ দূতাবাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিক মিশনগুলো বন্ধ করে দেওয়া থেকে বোঝা যায়, নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত দেশটি বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে বেশ হিমশিম খাচ্ছে।
গত সোমবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানায়, গত সপ্তাহে অ্যাঙ্গোলা ও উগান্ডার নেতাদের বিদায় জানিয়ে এসেছেন রাষ্ট্রদূতেরা। দুটি দেশেরই স্থানীয় গণমাধ্যম উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে খবর প্রকাশ করে।
১৯৭০ এর দশক থেকেই অ্যাঙ্গোলা ও উগান্ডার সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে উত্তর কোরিয়া। দেশগুলোর মধ্যে সামরিক সহযোগিতাসহ ভাস্কর্য নির্মাণের মতো বিরল খাতে বৈদেশিক অর্থ জোগানের নজির রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট এনকে প্রোএর প্রতিষ্ঠাতা শ্যাড ও’ক্যারোল বলেন, এ পর্যায়ে দূতাবাস বন্ধ করার মানে হলো দেশটি তার পররাষ্ট্রনীতিতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা, মানবিক সহায়তার পাশাপাশি অবৈধ রাজস্ব আহরণের ওপর প্রভাব পড়বে।
আজ বুধবার সাংবাদিকদের শ্যাড বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, বৈশ্বিকভাবে পিয়ংইয়ংকে কোণঠাসা করার মানসিকতা ও উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির দুর্বলতার কারণে বারোটির বেশি দূতাবাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’
সিউলের পুনরেকত্রীকরণ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, দূতাবাস বন্ধ করার এ সিদ্ধান্তে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য অর্থায়ন বন্ধের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব প্রতিফলিত হয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞা জোরদার হওয়ার কারণে উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের বাণিজ্যগুলো হোঁচট খেয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ফলে দূতাবাসগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, উত্তর কোরিয়ার ১৫৯টি দেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক থাকলেও ৫৩টি দেশে কূটনৈতিক মিশন রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কনস্যুলেট ও তিনটি প্রতিনিধি কার্যালয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপের প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তর কোরিয়া স্পেনেও এর দূতাবাস বন্ধ করে দেবে। ইতালির মিশন থেকেই পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করা হবে।
স্পেনের কমিউনিস্ট পার্টির ওয়েবসাইটে গত ২৬ অক্টোবর উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: