গাজায় নির্বিচার আগ্রাসনের জেরে এবার ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করলো লাতিন দেশ বলিভিয়া। ৩১ অক্টোবর, মঙ্গলবার রাতে এ ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার। খবর আল জাজিরার।
এদিন অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে সামরিক অভিযানের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। একে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে আখ্যা দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যত দ্রুত সম্ভব সংঘাত অবসানের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। একই সাথে গাজার প্রতি সমর্থন জানাতে সেখানে মানবিক সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণের সামিল।’
ওই ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলিভিয়ার সরকারকে হামাস সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।
বলিভিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রেডি মামানি বলেছেন, ‘সরকার গাজা উপত্যকায় সংঘটিত আগ্রাসী এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ ইসরায়েলি সামরিক হামলাকে প্রত্যাখ্যান এবং নিন্দা জানিয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েলের অবরোধের অবসান চায় বলিভিয়া।’
উল্লেখ্য, গাজা কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি অবরোধের মধ্যে রয়েছে এবং সেখানে প্রয়োজনীয় সাহায্য শুধুমাত্র মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছেছে মাত্র।
বলিভিয়া ছাড়াও লাতিন দেশ চিলি ও কলম্বিয়ারও তোপের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের দায়ে জরুরি আলোচনার জন্য ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে তারা। সাধারন ফিলিস্তিনিদের হত্যাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়েছে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট।
চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক ৩১ অক্টোবর, মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন যে, তিনি গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘনের কারণে তেল-আবিবে থাকা তার দেশের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করবেন।
তিনি এক্স-এ লিখেছেন, "চিলি ইসরায়েলের অমানবিক সামরিক অভিযানগুলোর দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানাচ্ছে এবং অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে চিলি। ইসরায়েলের অভিযান গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণকে ধ্বংস করছে।’
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোও ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে দেশ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
গাজায় একটি নতুন ইসরায়েলি বিমান হামলার রিপোর্টের পর লুলা এক্স-এ লিখেছিলেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো একটি যুদ্ধ দেখছি, যেখানে নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। থামুন! ঈশ্বরের ভালবাসার জন্য, থামুন!’
সূত্র : আল জাজিরা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: