ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক করিডোর ও সংঘর্ষবিরতি চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে বৈঠকে বসেছিলেন ইইউ নেতারা। সেখানে তারা দাবি করেছেন, গাজায় সাহায্য পাঠানোর জন্য একটি মানবিক করিডোর তৈরি করতে হবে। আর এর জন্য সাময়িক সংঘর্ষবিরতি দরকার। তাহলেই নিরাপদে ও উপযুক্ত পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী গাজায় পাঠানো সম্ভব হবে।
পরে ইউরোপীয় কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গাজায় মানবিক পরিস্থিতি সমানে খারাপ হচ্ছে। এই অবস্থায় সেখানে ত্রাণ পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তার জন্য একটি করিডোর তৈরি করা প্রয়োজন।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অঞ্চলে তাদের সহযোগী ও বন্ধু দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বেসামরিক মানুষকে রক্ষা করা, তাদের সাহায্য করা এবং তারা যাতে খাবার, পানি, ওষুধ, বাসস্থান ও জ্বালানি পায় তা নিশ্চিত করতে চায়। তারা এটাও দেখবে, এই সাহায্য যেন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হাতে না পড়ে।’
ইইউয়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। স্পেন, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়ামের মতো দেশগুলো সংঘর্ষবিরতির ওপর জোর দিয়েছে। জার্মানি ও হাঙ্গেরি বলেছে, ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার আছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার অল্প সময়ের জন্য ইসরায়েলের কামান ও সেনা গাজায় ঢুকেছিল। হামাসের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। হামাস তাদের লক্ষ্য করে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। ইসরায়েল জানিয়েছে, এটা ছিল তাদের যুদ্ধপ্রস্তুতির একটা অঙ্গ। স্থলপথে পুরোদস্তুর অভিযান শুরু করার আগে তারা এই প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা লড়াইয়ের পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়ার আগে এই প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন। আর সেনার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান সংঘাত শুরুর পর এটাই গাজাতে স্থলপথে সবচেয়ে বড় অভিযান। কামানগুলো সীমান্ত পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে বাড়িঘর ধ্বংস করেছে।
ইসরায়েলের ওয়ার ক্যাবিনেটের সদস্য বেনি গ্র্যান্টজ বলেছেন, স্থলপথে বিপুল শক্তি নিয়ে শিগগিরই আঘাত হানা হবে। তবে বৃহস্পতিবারের অভিযানে কোনও ইসরায়েলি আহত হননি। গাজায় কোনও মানুষ মারা গেছেন কি না তা জানা যায়নি।
এছাড়া হামাস রাশিয়ায় তাদের প্রতিনিধি দলকে পাঠিয়েছে। বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয় নিয়ে তারা রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলবেন। রাশিয়ার কিছু মানুষও বন্দি হয়ে আছেন।
রাশিয়ার সংবাদসংস্থা তাস জানিয়েছে, রাশিয়ার যে সব নাগরিককে বন্দি করে রাখা হয়েছে তাদের ছেড়ে দেওয়া এবং ওই এলাকায় থাকা রাশিয়ার মানুষকে নিরাপদে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করার বিষয়ে কথা হয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের প্রতিনিধিদের রাশিয়া সফর তারা একেবারেই ভালোভাবে নিচ্ছে না। অবিলম্বে তাদের দেশ থেকে বের করে দিক রাশিয়া। তাদের এইভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি বলে ইসরায়েল দাবি করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: