চীনের প্রতি ঝুঁকছে আফগানিস্তান, যোগ দিচ্ছে বিআরআইতে

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২০ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:২৩

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার। এ জন্য চীনের সঙ্গে তারা আলোচনা করতে টেকনিক্যাল টিম পাঠাবে। এর উদ্দেশ্য চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা।

তাই ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উচ্চাভিলাষী এই প্রকল্পে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তালেবান সরকার। তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে একমাত্র দেশ চীন, যাদের রাষ্ট্রদূত আছেন আফগানিস্তানে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।

বেইজিংয়ে চলছে বিআরআই বিষয়ক বার্ষিক সামিট। এর এক ফাঁকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন আফগানিস্তানের বাণিজ্য বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী হাজি নূরুদ্দিন আজিজি।

তিনি বলেন, চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে আমাদেরকে অংশ হতে অনুমতি দেয়ার জন্য চীনকে অনুরোধ করেছি। এ নিয়ে টেকনিক্যাল ইস্যুতে আলোচনা চলছে। এখানে যে ইকোনমিক করিডোরের কথা বলা হয়েছে তা প্রতিবেশী পাকিস্তানে বিদ্যমান।

আজিজি আরও বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে আলোচনা করতে একটি টেকনিক্যাল টিম চীনে পাঠাবে তার সরকার। এই ঘোষণা এটাই গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরে যে, তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন, যদিও আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে বিদেশী সরকারগুলো স্বীকৃতি দেয়নি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি কাবুলে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে চীন। বিদেশি কোনো দেশ হিসেবে চীনই প্রথম রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে। পক্ষান্তরে আফগানিস্তানে বিদেশি অন্য দেশগুলোর যেসব রাষ্ট্রদূত নিয়োজিত ছিলেন বা কূটনৈতিক মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ছিলেন, তাদেরকে তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

আফগান মন্ত্রী আজিজি বলেন, বিআরআই উদ্যোগে যোগ দেয়ায় আফগানিস্তানের সামনে কোনো বাধা থাকলে তা প্রতিরোধের বিষয়ে গভীরভাবে অনুধাবনের জন্য একটি টেকনিক্যাল টিম পাঠানো হবে চীনে। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি, তবে আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদ লিথিয়াম, কপার ও লোহাসহ অন্যান্য খনিজ উৎসের দিকে চীনের বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

এরই মধ্যে আফগানিস্তানে উপস্থিত থেকে মেটালার্জিক্যাল করপোরেশন অব চায়না লিমিটেড (এমসিসি) সহ বেশকিছু চীনা কোম্পানি কাজ করছে। তারা বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। বিশেষ করে তার মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত কপারের খনি। এই আলোচনা করা হয়েছে বা হচ্ছে পশ্চিমপন্থি সাবেক সরকার ও বর্তমান তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে।

বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তা উদ্বেগ তুলে ধরেছে। এর মধ্যে বিদেশি দূতাবাসগুলোতে দায়েশের অতীতের হামলা এবং কাবুলে চীনা বিনিয়োগকারীদের ওপর ঘন ঘন হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। এসব নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য নিরাপত্তা হবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার- এমন জোরালো অবস্থান প্রকাশ করেন আফগান মন্ত্রী আজিজি।

তিনি বলেন, দুই দশকের যুদ্ধ শেষে এখন দেশের অধিক ধর্মীয় গোষ্ঠীকে নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে শিল্প, কৃষি ও খনিজ অনুসন্ধানের কাজ করার সুযোগ উন্মুক্ত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের পাশাপাশি বৈঠকে ডিজিটাল অর্থনীতি ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নে অন্য ৩৪টি দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে একমত হয়েছে আফগানিস্তান।

সূত্র : জিও নিউজ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: