মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর হামলায় অন্তত ২৯ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গতকাল ৯ অক্টোবর সোমবার চীন সীমান্তের কাছে একটি শরণার্থী শিবিরে জান্তা বাহিনীর হামলায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) এক শীর্ষ কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি চীন সীমান্তের কাছে লাইজা নামে ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। কেআইএর কর্নেল নাউ বু জানিয়েছেন, গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পটিতে হামলা চালায় জান্তা বাহিনী। তিনি বলেন, ‘আমরা হামলার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। নিহতের মধ্যে শিশুও ছিল।’ তিনি জানান, এ ঘটনায় ৫৬ জন আহত হয়েছে।
কর্নেল নাউ বু জানিয়েছেন, ক্যাম্পটিতে কী ধরনের হামলা চালানো হয়েছিল, তা জানতে তদন্ত চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা কোনো বিমানের আওয়াজ শুনিনি। তবে হামলার জন্য জান্তা বাহিনী ড্রোন ব্যবহার করেছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। ক্ষমতাচ্যুত করা হয় গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে। কারাবন্দী করা হয় নোবেল বিজয়ী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিকে। এর পর থেকেই দেশটিতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বিদ্রোহ। গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক নেতারা মিলে গঠন করেন জাতীয় ঐক্যের সরকার। ছায়া সরকার পরিচালনার পাশাপাশি তাঁরা পিপলস ডিফেন্স ফোর্স বা পিডিএফ নামে একটি সশস্ত্র শাখাও চালু করেন।
পিডিএফ ও অন্যান্য মুক্তিকামী নৃগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন মিলে গড়ে তোলে এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশন। কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি সেই এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশনেরও সদস্য। গোষ্ঠীটি বিগত কয়েক দশক ধরেই কাচিনে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। কিন্তু ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা আরও তীব্রতর করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: