চলতি মাসে বন্যায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে লিবিয়ার অন্যতম শহর দেরনা। অঞ্চলটিতে চলতি মাসে বন্যায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শহরের সাবেক ও বর্তমান ৮ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন লিবিয়ার চিফ প্রসিকিউটর। তার অফিসের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
চলতি মাসের ১১ তারিখে দেরনা শহরে দুটি বাঁধ ভেঙে যায়। এ সময় শহরে ঘুর্ণিঝড় ডেনিয়েলের প্রভাবে ভারী বন্যা হয়। এতে শহরে প্রায় ২৫ শতাংশ এলাকা ডুবে যায় বলে জানান শহরের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় ৩৮০০ লোক নিহত হন। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, বন্যায় শহরের প্রায় ১০ হাজার লোক নিখোঁজ হয়েছেন।
২৫ সেপ্টেম্বর, সোমবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেনারেল প্রসিকিউটর অল-সিদ্দিক আল সৌর বলেন, আইনজীবীরা রোববার সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এ সাত কর্মকর্তা হলেন পানি সম্পদ কর্তৃপক্ষ এবং বাঁধ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনা, অবহেলা এবং দুর্যোগ মোকাবেলা ভুল পদক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে। বিবৃতিতে দেরনার বহিষ্কৃত মেয়র আব্দুলমেনাম আল-ঘাইতিকেও জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব কর্মকর্তারা অভিযোগ থেকে নিজেদের নির্দোষ দাবি করার মতো প্রমাণ দিতে পারেননি। ফলে তাদের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আটক রাখার নির্দেশ দেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আটক এ আট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তলব করা হবে।
গত সপ্তাহে আল সৌর বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দুটিতে ১৯৯৮ সাল থেকে ফাটল দেখা দিয়েছিল। পরে ২০১০ সালে তুরস্কের একটি কোম্পানি এটির মেরামতকাজ শুরু করে। কিন্তু কয়েক মাস পর ২০১১ সালে লিবিয়ার রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখে এ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিষয়টিতে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
চিফ প্রসিকিউটরের অফিস জানিয়েছে, বর্তমানে তদন্তে তুরস্ক ও লিবিয়ার পানি বিভাগের মধ্যকার চুক্তিতে বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটির বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত সোমবার দেরনা শহরে বিক্ষোভ করে বিক্ষুদ্ধ নগরবাসী। এ দিন সন্ধ্যায় দেরনার মেয়র আব্দুলমেনাম আল-ঘাইতির বাসভবনে আগুন দেন বিক্ষুব্ধরা।
সূত্র : আলজাজিরা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: