ডলার সংকট: ভোজ্য তেলের আমদানি কমাতে জলপাই চাষে পাকিস্তান

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৮

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


ডলার সংকটের মধ্যে ভোজ্য তেলের আমদানি ব্যয় কমাতে বিকল্প খুঁজছে পাকিস্তান। এজন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি জলপাই চাঁষের দিকে ঝুঁকছে। এরই মধ্যে ১৫ লাখেরও বেশি গাছ রোপণ করেছে পাকিস্তান। দেশটির সংবাদ মাধ্যম ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের জন্য আমদানির উপর নির্ভরতা কমানো এবং ভোজ্য তেলের দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো জলপাই চাষে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ‘পাকিস্তানে বাণিজ্যিকভাবে জলপাই চাষ, ধাপ–২’ প্রকল্পটি ২০২১–২০২২ সালে শুরু হয়েছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত চলবে।

প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ওয়াকাস চিমা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানে জলপাই চাষ এবং তা থেকে তেল উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাকিস্তানের মোট ৭৫ হাজার একর জমিতে জলপাই চাষ করা হবে।

চিমা বলেন, ‘অর্থায়নে ঘাটতি থাকার পরও আমরা জলপাই চাষের জন্য ১১ হাজার একর জমি কিনেছি। এক বিস্তারিত জরিপ ও গবেষণা বলছে, পাকিস্তানে প্রায় ৫০ লাখ বুনো জলপাই গাছ রয়েছে। এ থেকে কলম তৈরি করার ওপর সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যেন এটাকে পাকিস্তান ও এর কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সম্পদে পরিণত করা যায়।’

যেসব এলাকায় পানির অভাব, সেগুলোতে জলপাই চাষের জন্য ড্রিপ ইরিগ্যাশন ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থায় ফোটা ফোটা করে গাছের গোড়ায় ধীরে ধীরে পানি দেওয়া হয়। গত এক দশক ধরে পাকিস্তানে জলপাই চাষ হলেও তা ঘিরে ভোজ্য তেলসহ পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ছিল না।

৪৭টি কর্মসূচির আওতায় জলপাই চাষ ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অন্তত ২ হাজার ৮০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে স্থানীয় ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে দেশজুড়ে প্রায় ১২ লাখ জলপাই চারা রোপণ করা হবে।

জলপাই চাষের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ড. হাসান তারিক বলেন, পাকিস্তানে প্রায় ৮ হাজার ৯০০ একর জমিতে জলপাই চাষ করা হবে। এর পাশাপাশি গিলগিত বালতিস্তান ও আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরসহ চার প্রদেশে বুনো জলপাইয়ের কলম তৈরির কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ড. চিমা বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৪০ হাজার ৪০০ একর জমিতে জলপাই রোপণ করা হয়েছে এবং চলতি বসন্তে আরও ৮ হাজার ৯০০ একর জমিতে রোপণ করা হবে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার অন্যান্য অংশীদারদের সহযোগিতায় প্রায় ২০ লাখ বুনো জলপাইয়ের কলম তৈরি করবে।’

বরনি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক আজিম তারিক বলেন, এই প্রকল্পের জন্য সরকার সেরা মানের ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা ও জলপাই তেল নিষ্কাষণযন্ত্র সরবরাহ করছে। এর সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী স্টোরেজ, ফিলিং ও টেস্টিং উপকরণসামগ্রীও সরবরাহ করা হচ্ছে।’

গত জুলাইতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ১২০ কোটি ডলার সহায়তা পেয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার চরম সংকটে থাকা পাকিস্তান। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ডলার পেয়েছে দেশটি। তবু সংকট কাটছে না। বিদেশি ঋণ পরিশোধ ও আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে রিজার্ভ কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে, গত ৮ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ কমে ৭৬৪ কোটি ডলারে নেমেছে, একমাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। অগাস্টে দেশটি আমদানি দায় শোধ করেছে প্রায় ৫৯৬ কোটি ডলার।

সূত্র : ট্রিবিউন



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: