সমসাময়িক বিশ্ব বাস্তবতায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পুনর্গঠন প্রয়োজন বলে মনে করেন সংস্থাটির মহাসচিব। ৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ভারতের নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে এসে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে একথা বলেন আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে অনেক দিন ধরেই চলছে নানা আলোচনা। এবার সেই আলোচনায় যোগ দিলেন খোদ সংস্থাটির মহাসচিব। জাতিসংঘ মহাসচিব এক সতর্কবার্তায় বলেন, বিশ্বব্যাপী আর্থিক স্থাপত্য পুরনো, অকার্যকর ও অন্যায্য। এর জন্য প্রয়োজন গভীর কাঠামোগত সংস্কার। একই কথা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ক্ষেত্রেও বলা যেতে পারে। বহুপাক্ষিক সব সংস্থারই নতুন বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে নতুন কৌশল নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের মূল পর্বে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুরে দিল্লি পৌঁছান আন্তোনিও গুতেরেস। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যদি আমরা সত্যিই একটি বৈশ্বিক পরিবার হয়ে থাকি, তাহলে আমরা আজকে বরং একটি অকার্যকর পরিবারের মতো। আমাদের মধ্যে বিভাজন বাড়ছে, উত্তেজনা বাড়ছে এবং আস্থা কমে যাচ্ছে, যা শেষ পর্যন্ত দ্বন্দ্বের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
বর্তমানে ১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ২০টি প্রধান অর্থনীতির এ গোষ্ঠী (জি-টোয়েন্টি)। এর সদস্য দেশগুলো বিশ্বের জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। একইসাথে, বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এই জোট।
তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং কীভাবে উদীয়মান দেশগুলকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা করা যায়, সে বিষয়ে মতবিরোধ নয়াদিল্লিতে চুক্তিগুলোকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গুতেরেস বলেন, এই ভাঙন সবচেয়ে অনুকূল পরিস্থিতিতে হবে আরও উদ্বেগজনক। এটি আমাদের সময়ের বিপর্যয়। পরিবর্তনের একটি জটিল মুহূর্তে রয়েছে পৃথিবী। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সম্মেলন শুরুর আগের রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও উঠে আসে বিষয়টি। যেখানে নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়। পরে এক যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশ তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব বহুমুখী বৈশ্বিক এজেন্ডায় বিস্তৃত করার ওপর গুরত্ব আরোপ করেন।
প্রসঙ্গত, চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং জি-২০ বৈঠকে অনুপস্থিত থাকবেন। চীন ও ভারতের মধ্যে একটি বিতর্কিত সীমান্ত রয়েছে। অন্যদিকে, কূটনৈতিক চাপ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিনকে সম্মেলন থেকে দূরে রাখছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: