ইন্দোনেশিয়ায় আসিয়ান ব্লক, চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যদের সমন্বয়ে এক সামিটে বৃহস্পতিবার সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। তিনি বলেছেন, অর্থনৈতিক ও আর্থিক ব্যবস্থায় বিশ্ব একটি ‘বিরাট ফাটলের’ (গ্রেট ফ্রাকচার) ঝুঁকিতে আছে। অন্যদিকে এই শীর্ষ সম্মেলনে নতুন এক স্নায়ুযুদ্ধের সতর্কতা দিয়েছে চীন। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, বহুজাতিক উন্নয়নে অর্থায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিস্তৃত ইস্যুতে বক্তব্য রাখেন গুতেরাঁ। বিশ্ব যে সমস্যার মুখোমুখি তার একটি শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক সমাধান বের করার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অন্যদিকে এই সম্মেলনে বুধবার বক্তব্য রাখেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। তিনি জানান, বড় বড় দেশের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এই বিরোধ মোকাবিলা করার সময় ‘নতুন স্নায়ুযুদ্ধ’কে এড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বিভক্তির (ফ্রাগমেন্টেশন) বাস্তব ঝুঁকি আছে। বিশেষ করে বিশ্ব অর্থনীতি এবং আর্থিক ব্যবস্থায়, আছে প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে সংঘাতের মতো সমস্যা। ঋণে জর্জরিত উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য সাহায্য দেয়ার জন্য একটি প্রক্রিয়া গ্রহণের আহ্বান জানান গুতেরাঁ। তারল্য বাড়াতে এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির চাহিদা সমর্থন করার জন্য বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অতিরিক্ত ১০০০০ কোটি ডলার ছাড়ের বিষয়ে সমর্থন প্রকাশ করেন।
এর আগের দিন সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। তিনি বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্য ও বিরোধ উপযুক্ত উপায়ে মোকাবিলা করার দাবি তোলেন। বলেন, বর্তমানে কারও পক্ষ নেয়া, জোটের মধ্যে বিরোধ ও একটি নতুন স্নায়ুযুদ্ধের বিরোধিতার মতো বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যে-সব বিষয় উত্থাপন করেছেন তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত সহ বিভিন্ন অংশীদার দেশের নেতারা।
ওদিকে নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন না চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সব দূরত্বকে দূরে ঠেলে এতে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে তাকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু সে কথায় সম্ভবত কাজ হয়নি। জি২০ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার এই সম্মেলনে যোগ দেননি শি জিনপিং ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাকার্তায় বিশ্বনেতাদের এই সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ। এটি নিয়ে জোটটির কয়েকটি সদস্যদেশের সঙ্গে চীনের বিরোধও রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: