ইসরায়েলের কারাগারে অনশনরত অবস্থায় ফিলিস্তিনি বন্দী খাদের আদনানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আন্তসীমান্ত উত্তেজনা শুরুর পর এ যুদ্ধবিরতি সম্মতি প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা, আজ বুধবার ভোর থেকে এ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার অনশনরত অবস্থায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের জ্যেষ্ঠ সদস্য খাদের আদনানের মৃত্যু হয়। তিনি ইসরায়েলের কারাগারে ৮৭ দিন অনশন করছিলেন। ইসরায়েলের কারা বিভাগের ভাষ্য, আদনান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ৩০ বছরের বেশি সময় পর ইসরায়েলি হেফাজতে মারা যাওয়া প্রথম ফিলিস্তিনি অনশনকারী তিনি।
আদনানের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ফিলিস্তিনে ইসরায়েল অধিকৃত এলাকাগুলোয় বিক্ষোভ শুরু হয়। শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ফিলিস্তিনি নেতাদের অভিযোগ, আদনানকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার ইসরায়েল অভিমুখে বেশ কিছু রকেট হামলা হয়েছে। গাজায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে। জবাবে মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা চালায়। হামাসের অস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্র ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়।
এদিকে আদনানের মৃত্যুর ঘটনায় পশ্চিম তীরের হেবরন শহরের দোকানগুলো সাধারণ ধর্মঘট পালন করেছে। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ টায়ার জ্বালিয়ে দিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে। ইসরায়েলি সেনারাও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে।
ইসলামিক জিহাদের মুখপাত্র তারেক সেলমি বলেছেন, আজ বুধবার ভোর নাগাদ লড়াই শেষ হয়েছে। দুজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছেন, বুধবার ভোর সাড়ে তিনটা থেকে এ ‘পারস্পরিক ও যুগপৎ’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টায় এ যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তাঁরা।
ইসরায়েলের কারাগারে বিনা বিচারে আটক রাখার প্রতিবাদে ২০১১ সাল থেকে অন্তত তিনবার অনশন ধর্মঘট করেছেন আদনান। অন্য ফিলিস্তিনি বন্দীদের অনেককেও অনশন করতে দেখা যায়। অনেক সময় গণ–অনশনের ঘটনাও ঘটে। তবে ১৯৯২ সাল থেকে আদনান মারা যাওয়ার আগপর্যন্ত অনশনরত কোনো ফিলিস্তিনির মৃত্যু হতে দেখা যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: