পাকিস্তানি চিকিৎসক শাহনওয়াজ কানভারের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগ উঠার পরপরই বিক্ষুদ্ধ জনতার হাত থেকে বাঁচতে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। পরে অবশ্য আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশের তরফ থেকে নিরাপত্তার আশ্বাসও দেয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সেই পুলিশই এনকাউন্টারের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে। সরকারি এক তদন্তে এমন তথ্যই উঠে আসে বলে জানিয়েছেন একজন প্রাদেশিক মন্ত্রী। খবর জিও নিউজের।
২৬ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিন্ধু প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লাঞ্জার জানান, উমরকোটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত চিকিৎসক শাহনওয়াজ সাজানো এনকাউন্টারে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সামাজিক মাধ্যমে ধর্ম অবমাননা করে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে পাকিস্তান পেনাল কোডে উমরকোট থানায় চিকিৎসক শাহনওয়াজের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়। পরে তাকে মিরপুরখাস থানায় স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু পরের দিন তাকে সিন্ধু পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। যদিও পুলিশ দাবি করে তিনি এনকাউন্টারে নিহত হয়েছেন।
সিন্ধু প্রদেশের স্থানীয় পুলিশ প্রধান নিয়াজ খোসো জানান, ডা. শাহনওয়াজ ও তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। জবাবে পুলিশ গুলি করলে তিনি নিহত হন। তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যান। তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও একদল উত্তেজিত জনতা তা পুড়িয়ে দেয়।
কথিত এই এনকাউন্টারের ঘটনা জানাজানি হলে পাকিস্তানজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়। সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ এই ঘটনা আমলে নেন এবং মিরপুরখাসের ডিআইজি, এসএসপি এবং অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের বরখাস্তের আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে সিন্ধুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শহীদ বেনজিরাবাদের ডিআইজি পারভেজ চান্দিওর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি কথিত পুলিশ এনকাউন্টারকে ভুয়া বলে অভিহিত করেছেন। সিন্ধুর প্রাদেশিক পরিষদ কথিত এই এনকাউন্টারের সঙ্গে জড়িত পুলিশদের বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে। ডিআইজি, এসএসপিকে বরখাস্ত করা এবং কোনো ঘটনায় তদন্তের দৃষ্টান্ত বিরল।
তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ অফিসাররা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমরা তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে বলেছি। মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: