নিওম প্রকল্প নিয়ে নানা জল্পনা–কল্পনার মধ্যে এবার এটির একটি ডিজিটাল প্রদর্শনী (রোডশো) নিয়ে চীনে গেছে সৌদি আরব। ২২ এপ্রিল সোমবার বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহেই নিওম প্রকল্পের কর্মকর্তারা চীনা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে দেশটির বেইজিং, সাংহাই এবং হংকং সফর করেছেন। তাঁরা রহস্যময় ওই মেগাসিটির নানা সুবিধা ও সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের তৎপরতার পরও এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি ঘোষণা করা হয়নি। তবে প্রকল্পের প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া হংকং ইনোভেটিভ টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান লিওনার্ড চ্যান বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, প্রদর্শনীটি নিওমকে রহস্যের মোড়ক থেকে বের করে এনেছে।
লিওনার্ড চ্যান আরও জানান, উচ্চাভিলাষী ওই প্রকল্প যারা পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁদের বেশির ভাগই নিরপেক্ষ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। নিজে বিনিয়োগকারী হলেও ‘দ্য লাইন’ খ্যাত নিওম সিটি প্রকল্পে বিনিয়োগের বিষয়ে খুব বেশি আগ্রহ দেখাননি চ্যান। প্রদর্শনীতে দেখানো নিওম শহর প্রকল্পকে তিনি অনেকটা ভিডিও গেমের সিমসিটির সঙ্গে তুলনা করেছেন।
বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রদর্শনীর সময় নিওম শহরের কর্মকর্তারা এই শহর নিয়ে সাম্প্রতিক কিছু নেতিবাচক প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দেননি। চলতি মাসের শুরুতেই ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দ্য লাইনে যে পরিমাণ মানুষের বসবাসের কথা ছিল সেই সংখ্যাটি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে সৌদি আরব। ২০৩০ সালের মধ্যে ওই শহরটিতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ১৫ লাখ থেকে কমিয়ে ৩ লাখ লক্ষ্যমাত্রা দেখিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
তবে নিওমের নির্বাহী পরিচালক তারেক কাদ্দুমি বলেছিলেন, ভবিষ্যতে এই শহরে ৯০ লাখ মানুষের বসবাস নিশ্চিত করা হবে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন–২০৩০ প্রকল্পে ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের বিষয়ে ব্যাপক উদ্বেগ উত্থাপিত হয়েছে। বিশেষ করে, নিওম প্রকল্পে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। এ অবস্থায় দেশটি নিওম এবং অন্যান্য ভিশন–২০৩০ মেগাপ্রকল্পে অর্থায়নের জন্য ঋণ নিতে শুরু করেছে বলে গত ফেব্রুয়ারিতে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
গত সপ্তাহে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, অর্থ সংগ্রহের জন্য নিওম প্রকল্পটি প্রথমবারের মতো বন্ড ইস্যু করারও পরিকল্পনা করছে। নাম প্রকাশ না করা একটি সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, ওই বন্ডের মাধ্যমে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ সংগৃহীত হতে পারে।
নিওম প্রকল্পের ওই শোটির আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল, জাপানের টোকিও, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি, বোস্টন, ওয়াশিংটন ডিসি, মিয়ামি, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, ফ্রান্সের প্যারিস, জার্মানির বার্লিন এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনেও প্রদর্শন করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: