একটি উড়োজাহাজ চলা অবস্থায় দুই পাইলটই যদি ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে কী অবস্থা হবে বলুন তো? সত্যি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ার বাতিক এয়ারের একটি এ৩২০ এয়ারবাসের বেলায়। তবে সৌভাগ্যক্রমে কোনো বিপদ ছাড়াই উড়োজাহাজটি নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।
সম্প্রতি প্রকাশিত ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে এয়ারলাইভ ডট নেট।
ঘটনাটা গত ২৫ জানুয়ারির। এ৩২০ উড়োজাহাজটি যাত্রী নিয়ে শিডিউল অনুসারে জাকার্তার সুকর্ণ-হাতা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে কেন্দারির হালু ওলেয়ো বিমানবন্দরে যায়। তারপর সেখান থেকে আবার যাত্রীসহ ফিরতি ফ্লাইট শুরু করে। এটি পরিচালিত হচ্ছিল দুজন পাইলট ও চারজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের মাধ্যমে।
উড়োজাহাজটি যখন ৩৬ হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছায় তখন দুই পাইলটই হেডসেট খুলে ফেলেন এবং ককপিটের লাউডস্পিকারের ভলিউম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় কমান্ডে থাকা পাইলট (পিআইসি) দ্বিতীয় পাইলটের (এসআইসি) কাছে বিশ্রাম নেওয়ার অনুমতি চান। এটা মঞ্জুর হয়। পিআইসি ঘুমিয়ে পড়েন। অপর পাইলট তখন দায়িত্ব বুঝে নেন।
কমান্ড পাইলটের ঘুম ভাঙলে অপর পাইলটের কাছে জানতে চান, তিনি বিশ্রাম নিতে চান কি না। জবাবে এসআইসি জানান, তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন নেই। দুই পাইলট এরপর নিজেদের মধ্যে ৩০ সেকেন্ডের মতো কথা বলেন। তারপর পিআইসি আবার ঘুমিয়ে পড়েন।
প্রায় ২০ মিনিট পর এসআইসি জাকার্তা এয়ার কন্ট্রোল সেন্টারের (এসিসি) একটি নির্দেশ পাঠ করেন। তারপর অসাবধানতাবশত ঘুমিয়ে পড়েন। উড়োজাহাজ চলছিল অটো পাইলটেই। ১২ মিনিট পর জাকার্তা এসিসি জানতে চায়, BTK6723 ফ্লাইটটি বর্তমানে যেদিকে যাচ্ছে, এটা ধরে আর কতক্ষণ চলবে। কিন্তু পাইলটদের কাছ থেকে কোনো উত্তর পায়নি।
এসআইসির সঙ্গে এসিসির শেষ রেকর্ড করা আলাপচারিতার ২৮ মিনিট পর কমান্ড পাইলট ঘুম থেকে উঠে পড়েন। আর আবিষ্কার করেন উড়োজাহাজটি সঠিক পথে নেই। তিনি তার পরই দেখতে পান অপর পাইলট ঘুমিয়ে আছেন। তিনি তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। এ সময়ই জাকার্তা এসিসিকে জানান, BTK6723 -এর রেডিও যোগাযোগে সমস্যা হয়েছিল এবং এর সমাধান হয়েছে এখন। তারপর উড়োজাহাজটি চলতে থাকে এবং ঝামেলা ছাড়াই জাকার্তায় অবতরণ করে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: