টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের বিরল ভিডিও প্রকাশ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৮ মে ২০২৩ ১২:৪৩

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

 

আটলান্টিক মহাসাগরে ১৯১২ সালে নসাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে বিশাল বরফ খন্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায় বিলাসবহুল প্রমোদতরি টাইটানিক। জাহাজটি এখনও আটলান্টিক মহাসাগরের ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে পড়ে রয়েছে।

সমুদ্রের তলদেশে পড়ে থাকা বৃহত্তম এ জাহাজের নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে গভীর সমুদ্রের তলদেশ মাপা প্রতিষ্ঠান ম্যাগেলান লিমিটেড এবং আটলান্টিক প্রোডাকশনস। ২০২২ সালে তারা এ কাজটি করেছেন।

তারা জানিয়েছে, এবারের ভিডিওতে টাইটানিকের যে চিত্র উঠে এসেছে, তা আগে কখনো দেখা যায়নি। আগে টাইটানিকের যেসব ভিডিও বা ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, সেগুলো ঘোলা বা অস্পষ্ট ছিল। এ ছাড়া পুরো জাহাজটির চিত্রও তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।

তবে নতুন ভিডিওতে জাহাজটির পুরো ধ্বংসাবশেষের চিত্র উঠে এসেছে। এতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, টাইটানিকটি দুই খণ্ড হয়ে পড়ে আছে। জাহাজটির বো, স্টার্ন, এমনকি প্রপেলারটির নাম্বারও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

বুধবার (১৭ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গভীর সমুদ্রে ম্যাপিং ও স্ক্যান করে টাইটানিক জাহাজটির থ্রিডি ভিডিও ধারণা করা হয়েছে। ভিডিওটি দেখলে মনে হয় যেন, জাহাজটির আশপাশে কোনো পানি নেই। শুধুমাত্র একটি খালি জায়গায় এটি পড়ে রয়েছে।

টাইটানিকের বিশ্লেষক পার্কস স্টিফেনসন বিবিসিকে বলেছেন, “জাহাজটি সম্পর্কে এখনও কিছু প্রশ্ন, মৌলিক প্রশ্ন রয়েছে। যার উত্তর দেওয়া দরকার।”

৭৩ বছর পর ১৯৮৫ সালে সাগরের তলদেশে এর ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত হয়। এর পর থেকেই এ জাহাজটির প্রতি মানুষের কৌতূহল আরও বেড়ে যায়। কিন্তু এটি এতটাই বিশাল যে গভীর অন্ধকারে, ক্যামেরা দ্বারা জাহাজের কিছু ছবি তোলা যেত। পুরো জাহাজটি কখনোই দেখানো সম্ভব হয়নি।

ম্যাপিং ও স্ক্যান করে জাহাজটির সম্পূর্ণ ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে। অবশ্য এ ভিডিও ধারণে সমুদ্রের নিচে যাননি বিশেষজ্ঞরা। তারা সমুদ্রের উপর থেকেই সাবমার্সিবল ব্যবহার করে ও ২০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যয় করে জাহাজটি মাপামাপি এবং ছবি তুলেছেন। জাহাজটির প্রত্যেকটি অ্যাঙ্গেল থেকে ৭০ হাজারের বেশি ছবি তোলা হয়েছে। এরপর সেগুলো সাজিয়ে তৈরি করা হয়েছে থ্রিডি ভিডিও।

নতুন এ ভিডিওতে জাহাজের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলোও ওঠে এসেছে। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে মদের বোতল, মানুষের জুতাসহ বেশ কিছু জিনিস দেখা গেছে।

ম্যাগেলানের গেরহার্ড সেফার্ট এ অভিযানের পরিকল্পনাটি করেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, তার হাতে নেওয়া এটি সবচেয়ে বড় ডুবো স্ক্যানিং প্রকল্প। যার গভীরতা ৪ হাজার মিটার।

এই জাহাজডুবির ঘটনাকে উপজীব্য করে ১৯৯৭ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক জেমস ক্যামেরনের নির্মিত ‘টাইটানিক’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি মুক্তির ২৫ বছর পূর্তিতে এটি আবারও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে টাইটানিকের বিরল ভিডিওচিত্রটিও প্রকাশ পেল।

 

সূত্র : বিবিসি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: