খুঁটিতে বেঁধে মুসলিমদের পেটানো, সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত গুজরাট পুলিশ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ ০১:৫৪

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

নিজেদের বিরত্ব জাহির করতে পাঁচ মুসলিম যুবককে রাস্তার পাশে থাকা খুঁটিতে বেঁধে নৃশংসভাবে পিটিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির রাজ্য গুজরাটের চার পুলিশ কর্মী। গুজরাট হাইকোর্ট ওই অমানবিক আচরণের জন্য নরপিশাচ রুপী চার পুলিশ কর্মীকে ১৪ দিনের জেলের সাজা দিয়েছিল। ওই সাজাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিলেন ওই পুলিশ কর্মীরা।

কিন্তু সেখানেও স্বস্তি তো মিললোই না, উল্টো শীর্ষ আদালতে বিচারপতিরা অভিযুক্তদের খোঁচা দিয়ে বলেন, এবার জেলে গিয়ে মজা উপভোগ করুন।

২০২২ সালে অক্টোবরে গুজরাতের খেরা জেলায় গরবা নাচের উপরে হামলার ঘটনায় মোট ১৩ জন মুসলিমকে আটক করে পুলিশ। তাদের মধ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তার পাশে থাকা খুটিতে বেঁধে বেধরক মারধর করা হয়। গুজরাট পুলিশের ওই গুন্ডাগিরি নিমিষেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। গোটা ভারতজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। মামলা গড়ায় গুজরাট হাইকোর্টে।

গত বছরের ১৯ অক্টোবর গুজরাট হাইকোর্ট মুসলিম যুবকদের মারধরে অভিযুক্ত ইন্সপেক্টর এভি পারমার, এস আই ডিবি কুমাবাত, হেড কনস্টেবল ডি এল ধাবী ও আর আর ধাবিকে ১৪ দিনের জেলের সাজা শোনান।

ওই রাইট এ চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন বীরপুঙ্গব চার পুলিশ কর্মী। মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিআর গাভাই ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ অভিযুক্তদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন, খুটিতে বেধে আটক ব্যক্তিকে পেটানোর অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের? হেফাজতে থাকাকালীন একজন আসামের সঙ্গে কে ব্যবহার করা উচিত সে সম্পর্কে কোন ধারণা নেই? এবার জেলে যান সেখানে গিয়ে হেফাজতে থাকার মজা নিন।

বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘কোন আইনে মানুষকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারা হলো? যান এখন কারাদণ্ড উপভোগ করুন।’ পুলিশ কর্মীদের নিন্দা করে বিচারপতি মেহতা বলেন, ‘এটা কী ধরনের অত্যাচার? মানুষকে খুঁটিতে বেঁধে প্রকাশ্যে মারা হচ্ছে, তার ভিডিও তোলা হচ্ছে, তারপর আপনারা আবেদন করছেন, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এতে হস্তক্ষেপ করবে?’

আইনজীবী সিদ্ধার্থ দাভের বক্তব্য ছিল, পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত চলছে। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশ কর্মীরা কি ইচ্ছে করে হাইকোর্টের নির্দেশ ভেঙেছে? তারা কি হাইকোর্টের নির্দেশ জানত? বিচারপতি গাভাই বলেন, নির্দেশ না জানার অজুহাত দেয়া যায় না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: