পাখি গণনায় তিস্তায় দেখা মেলেনি পরিযায়ী পাখিদের। অবশেষে জলঢাকা, মূর্তি, ডায়না এবং খুট্টিমারি আক্ষেপ মিটিয়েছে বনকর্মী ও পাখিপ্রেমীদের যৌথ দলকে। ১০ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই দলের প্রায় একশো কর্মী বিভিন্ন পাহাড়ি নদী ও জলাশয়ে ঘুরে পরিযায়ীদের খোঁজ করেন।
ওই দলের তরফে অনির্বাণ মজুমদার জানান, গত বছরেও তিস্তার গজলডোবা-সহ বিভিন্ন প্রান্তে এবং মহানন্দা ক্যানেলে প্রচুর পরিযায়ীর দেখা মিলেছে। সেখানে ছিল রুডি শেল ডাক অর্থাৎ চোখাচোখি, কমন ভুজেন্ডার, রেড কর্বোরেট, নর্দান ল্যাপউইং। ইউরোপ এবং সাইবেরিয়ার আশপাশ এলাকা থেকে ডুয়ার্সে উড়ে আসা নর্দান ল্যাপউইংদের ঝাঁক বেঁধে নীল আকাশে ডানা মেলার দৃশ্য দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন। বুক সাদা, সবজে ধূসর ওই পাখিরা তো বটেই, অন্য পরিযায়ীদেরও ১০ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি তিস্তা নদীতে সমীক্ষায় দেখা মেলেনি। পরিস্থিতি দেখে উদ্বিগ্ন ছিলেন পাখিপ্রেমীরা।
তবে ১৪ জানুয়ারি জলঢাকা, মূর্তি ও ডায়না নদীতে সমীক্ষায় অক্ষেপ অনেকটাই মিটেছে। তবে সেখানে এবার নর্দান ল্যাপউইংয়ের খুব একটা দেখা মেলেনি। বেশি সংখ্যায় দেখা দিয়েছে রুডি শেল ডাক অর্থাৎ চোখাচোখি, কমন ভুজেন্ডার, রেড কর্বোরেট জাতীয় পরিযায়ীরা। একইভাবে ১৫ জানুয়ারি খুট্টিমারির ঝিলেও পরিযায়ী পাখি মিলেছে।
‘হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’-এর কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানান, সাধারণত হেমন্তে ধানখেত সোনালি হতে উত্তুরে হিমেল হাওয়ার ছোঁয়া লাগতে পরিযায়ী পাখিরা দলে-দলে পাড়ি দিতে শুরু করে উত্তরের নদী ও জলাশয়ে। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সেটা চলে। গোটা শীতকাল ওরা এখানে থাকে।
পাখিপ্রেমীরা মনে করছেন বন্যার পরে একদিকে যেমন তিস্তায় জল কমেছে। অন্যদিকে জল দূষণে প্রচুর মাছ মরেছে। জল ও খাদ্য সংকটের কারণে হয়ত পরিযায়ীরা এবার মুখ ফিরিয়েছে। তবে সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য এখনও মেলানোর কাজ শেষ হয়নি। পাখিপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, “কয়েকদিনের মধ্যে পরিযায়ীদের সংখ্যা সামনে আসবে।”
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: