কোনো গ্রহ থেকে বিচ্যুত অংশ বা বড় টুকরাকে বলে গ্রহাণু। সেই গ্রহাণুকেই আবার কেন্দ্র করে ঘুরছে আরেকটি টুকরা! বিস্ময়কর এই ঘটনা ধরা পড়েছে নাসার বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে।
৩ নভেম্বর শুক্রবার হাফিংটন পোস্টের এক খবরে বলা হয়, চলতি সপ্তাহেই নাসার মহাকাশযান লুসির নজরে পড়েছে বিষয়টি। ক্ষুদ্র চাঁদটি যে গ্রহাণুকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, তার নাম ডিনকিনেশ। গত বৃহস্পতিবার মঙ্গল গ্রহের ৪৮ কোটি কিলোমিটার দূরে প্রধান গ্রহাণু বেল্টে ফ্লাইবাইয়ের সময় ডিনকিনেশের ব্যতিক্রম ঘটনাটি ধরা পড়ে। ৪৩৫ কিলোমিটার দূর থেকে ক্ষুদ্র চাঁদসহ ডিনকিনেশ গ্রহাণুর একটি ছবিও তুলেছে মহাকাশযান লুসি।
পৃথিবীতে পাঠানো তথ্য ও ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, ডিনকিনেশ গ্রহাণুটির ব্যাস এক কিলোমিটারের কম, মাত্র ৭৯০ মিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। আর এটিকে ঘনিষ্ঠভাবে প্রদক্ষিণ করা ক্ষুদ্র চাঁদটি আকারে প্রায় ২২০ মিটার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে পাঠানো মহাকাশযান লুসির গন্তব্য আরও অনেক দূরে। ২০২৭ সালের মধ্যে একেবারে বৃহস্পতি গ্রহের কাছাকাছি যাবে এটি। সেখানে রয়েছে ডিনকিনেশের চেয়ে বড় এবং রহস্যময় কিছু গ্রহাণু। যাত্রাপথে মহড়া হিসেবে তাই ডিনকিনেশের ছবি পাঠিয়েছে লুসি। বৃহস্পতির কাছাকাছি ট্রোজান গ্রহাণু মণ্ডলে একটানা ৬ বছর অনুসন্ধান চালাবে এটি।
ইথিওপিয়ার আমহারিক ভাষায় ডিনকিনেশ মানে ‘আপনি অসাধারণ’। লুসি নামটিও আমহারিক ভাষা থেকে নেওয়া। ১৯৭০-এর দশকে ইথিওপিয়ায় ৩২ লাখ বছর আগের এক মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল। আমহারিক ভাষায় ওই মানুষের নাম রাখা হয়েছিল লুসি; যার অর্থ অসাধারণ মানুষ।
এদিকে গ্রহাণুর চাঁদ আবিষ্কারের বিষয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান বিজ্ঞানী হ্যাল লেভিসন বলেছেন, ‘ডিনকিনেশ সত্যিই তার নামের যথার্থতা প্রমাণ করেছে। এটি বিস্ময়কর।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: