অ্যান্টার্কটিকার সামুদ্রিক পাখিগুলোর মধ্যে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে। পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ঘন উপনিবেশের মাধ্যমে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে জরিপে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে ২৩ অক্টোবর সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, উচ্চ প্যাথোজেনিক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (এইচপিএআই) দক্ষিণ জর্জিয়ার বার্ড আইল্যান্ডে বাদামী স্কুয়া পাখিগুলোর মধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে । এটা অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে প্রথম কেস বলে জরিপে বলা হয়েছে।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে অনুমান করছে পাখিরা দক্ষিণ আমেরিকায় অভিবাসন থেকে ফিরে আসার সময় এই রোগটি বহন করে নিয়ে এসেছে।
এই বছরের আগস্টে গ্লোবাল এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বিশেষজ্ঞদের একটি উন্মুক্ত নেটওয়ার্ক দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এইচপিএআই এইচ৫ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। ২০২২ সালে অক্টোবরে এটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল।
গত ২৩ শে আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে অফফ্লু সতর্ক করে বলেছিল, বসন্তে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বন্য পাখিদের অ্যান্টার্কটিকার প্রজনন স্থানে স্থানান্তরের কারণে এই রোগটি অ্যান্টার্কটিকা এবং এর উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে পৌঁছতে পারে।
এটি অ্যান্টার্কটিকার বন্য পাখি এবং স্তন্যপায়ী জনসংখ্যার উপর প্রচুর নেতিবাচক প্রভাব নির্দেশ করে। কারণ এই ভাইরাস থেকে তাদের মৃত্যুর সম্ভাব্য সংবেদনশীলতা এবং তাদের ঘন উপনিবেশে হাজার হাজার পিনিপেড এবং কয়েক হাজার পাখি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
বার্ড ফ্লু রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র অনুসারে এই রোগটি বন্য জলজ পাখিদের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে ঘটে থাকে। সংক্রমিত পাখি তাদের লালা এবং অন্যান্য শারীরিক স্রাবের মাধ্যমে অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে ভাইরাস প্রেরণ করতে পারে।
অফফ্লু অনুসারে অ্যান্টার্কটিকা এবং এর উপকূলীয় দ্বীপগুলো ১০০ মিলিয়নেরও বেশি প্রজননকারী পাখি, ছয় প্রজাতির পিনিপেড এবং ১৭ প্রজাতির সিটাসিয়ান এর আবাসস্থল। এই অঞ্চলে দক্ষ ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করে অফফ্লু এর মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি। ২০০৫ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং বিশ্ব প্রাণী স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে ভাইরাসগুলোর উপর তথ্য সংগ্রহ এবং রোগের ধরণগুলো বিশ্লেষণ করেছিল।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে অ্যান্টার্কটিকায় যুক্তরাজ্যের জাতীয় বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও দক্ষিণ জর্জিয়ায় দুইটি গবেষণা কেন্দ্র পরিচালনা করে। যার মধ্যে একটি বার্ড আইল্যান্ডে নিশ্চিত হওয়া বার্ড ফ্লু কেস শনাক্ত করেছে।
চলতি বছরে জাপানে বার্ড ফ্লু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রোগের বিস্তার ঠেকাতে প্রায় ১০ মিলিয়নেরও বেশি পাখি মারা হয়েছে। যার ফলে দেশটিতে মুরগির সরবরাহে চাপ সৃষ্টি হয়েছে এবং ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: