টাইফুন হাইকুইয়ের ফলে সৃষ্ট বন্যায় চীনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি প্রজনন খামার থেকে প্রায় ৭৫ টি কুমির পালিয়েছে। দেশটির গুয়াংডং প্রদেশের মাওমিং অঞ্চলের একটি লেক বন্যার পানিতে উপচে পড়লে এই ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
চীনা কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পালিয়ে যাওয়া কুমিরের বেশ কয়েকটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ 'নিরাপত্তার কারণে' উদ্ধারকৃত বেশ কয়েকটি কুমিরকে গুলি করে বা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যা করেছে।
চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত মোট আটটি কুমিরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে আকারে বড় এমন অনেকগুলোকেই এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাই খামারের আশেপাশে থাকা গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় বাড়িতে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
টাইফুন হাইকুই এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ এশিয়ায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। যার ফলে চীন, হংকং, তাইওয়ান, জাপান ইত্যাদি দেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
টাইফুনটিকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা এবং ঘটেছে শতাধিক ভুমিধসের ঘটনা। ফলে দক্ষিণ চীনের প্রায় ৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে অন্তত তিনজন। তাইওয়ানেও হতাহতের খবর পাওয়া গিয়েছে।
মাওমিংয়ের জরুরি ব্যবস্থাপনা ব্যুরো অনুসারে, পালিয়ে যাওয়া কুমিরের ৬৯ টি প্রাপ্তবয়স্ক এবং ছয়টি ছোট কুমির। তবে এই কুমিরগুলোর দ্বারা এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গভীর পানিতে কিছু কুমির অবস্থান করছে। কুমিরগুলোকে খুঁজে বের করার জন্য অত্যাধুনিক সোনার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদপত্র ডাজং ডেইলিতে জেলার জরুরি ব্যুরোর এক কর্মকর্তা বলেন, "বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে পালিয়ে যাওয়া কুমিরের পরিমাণ একটু বেশি।"
ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে বলা হয়, পালিয়ে যাওয়া কুমিরগুলো সিয়ামিজ প্রজাতির। যুক্তরাজ্যের চিড়িয়াখানা ক্রোকোডাইলস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে, প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই কুমিরগুলো দৈর্ঘ্যে ৩ মিটার কিংবা ১০ ফিট পর্যন্ত হয়। আর এই কুমিরগুলো মিঠা পানিতে বসবাস করে।
এখন পর্যন্ত যেসব কুমিরগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর গড় ওজন প্রায় ৭৫ কেজি। ফায়ারফাইটারদের তথ্যমতে, এগুলোর দৈর্ঘ্য ২ মিটারের চেয়েও বেশি।
গুয়াংডং প্রদেশের মাওমিং অঞ্চলে কুমির প্রজননের বেশ কয়েকটি ফার্ম রয়েছে। মূলত এর মাংস ও চামড়ার চাহিদার থাকায় এগুলো চাষ করা হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: