মানুষের হৃৎপিণ্ডে প্রথমবারের মতো মাইক্রোপ্লাস্টিক বা প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা শনাক্ত হয়েছে। সম্প্রতি আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।
চীনের বেইজিং আনঝেন হাসপাতালের বিজ্ঞানীদের একটি দল মানব হৃদয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পেয়েছে। তারা কার্ডিওভাসকুলার সার্জারির সময় ১৫ জন রোগীর হৃৎপিণ্ডের টিস্যু বিশ্লেষণ করে এই মারাত্মক ক্ষুদ্র কণা শনাক্ত করেছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার সাইজ ৫ মিলিমিটারের চেয়েও ছোট। এই অতিক্ষুদ্র কণা মানবদেহে নাক, মুখ বা শরীরের অন্যান্য গহ্বর দিয়ে প্রবেশ করতে পারে।
গবেষণা থেকে জানা গেছে, ডাক্তার কুন হুয়, জিউবিন ইয়াং ও তাদের দলের অন্যান্য সদস্যরা অনুসন্ধান করতে চেয়েছিলো এসব পার্টিকেলস মানবদেহের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের মধ্যে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ এক্সপোজারের মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে কি না। এর জন্য বিজ্ঞানীরা ১৫ জন রোগীর হৃৎপিণ্ডের টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন রোগীর রক্তের নমুনাও তারা সংগ্রহ করেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পাঁচ ধরণের হৃৎপিণ্ডের টিস্যুতে ৯ ধরণের প্লাস্টিকের কণা খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও সার্জারির সময়ও বেশ কিছু মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।
হৃৎপিণ্ডের তিনটি ভিন্ন অংশে পাওয়া প্লাস্টিকগুলির মধ্যে রয়েছে: পলি (মিথাইল মেথাক্রাইলেট), একটি প্লাস্টিক; যা সাধারণত কাচের চূর্ণ-প্রতিরোধী বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পলিথিন টেরেফথালেট; পোশাক এবং খাবারের পাত্রে ব্যবহৃত হয় এবং পলিভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি); এ ধরণের প্লাস্টিক জানালার ফ্রেম, ড্রেনেজ পাইপ, পেইন্টে ব্যবহার করা হয়।
গত বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে মানুষ প্রায় পাঁচ গ্রাম প্লাস্টিকের কণা গ্রহণ করে। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো প্যাকেজিং বর্জ্য থেকে মানুষের খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে এবং সামুদ্রিক লবণ, সামুদ্রিক খাবার এবং এমনকি পানীয় জলের মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করে।
সূত্র : নিউইয়র্ক পোস্ট
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: