ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরীর প্রবেশ, ভেনেজুয়েলায় বাড়ছে উত্তেজনা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৭

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বের বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড বিমানবাহী রণতরীকে কেন্দ্রে রেখে নৌবাহিনীর আক্রমণাত্মক যুদ্ধজাহাজের একটি বহর ক্যারিবীয় সাগরে পৌঁছেছে, জানিয়েছে নৌবাহিনী।

ক্যারিবীয় সাগর অঞ্চলে তথাকথিত মাদকবাহী জলযানগুলোতে বাহিনীর হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওই অঞ্চলের দেশ ভেনেজুয়েলার বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে বিমানবাহী রণতরী বহরটি সেখান হাজির হল।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নৌবাহিনীর এই ‘স্ট্রাইক গ্রুপ’কে ক্যারিবীয় অঞ্চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

বিবিসি জানিয়েছে, ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত অন্তত ১৯টি কথিত মাদকবাহী নৌযানে হামলা চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে আর এতে অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ও দেশটির অন্য কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেছেন, এখানে যুক্তরাষ্ট্র একটি মিথ্যা সংকট তৈরি করছে’ আর তারা ভেনেজুয়েলার বামপন্থি সমাজতন্ত্রী সরকারকে উৎখাত করার সুযোগ খুঁজছে।

ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কথিত মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রতিবেশী দেশ কলম্বিয়ার সঙ্গেও প্রশাসনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোকে ‘একজন ঠগ ও খারাপ লোক’ বলে চিহ্নিত করেছেন ট্রাম্প।

পেত্রো মঙ্গলবার তার দেশের জননিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ক্যারিবীয় সাগরে জলযানে হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করা স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

এক্স এ তিনি লিখেছেন মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই ‘অবশ্যই ক্যারিবীয় জনগণের মানবাধিকারকে সমুন্নত রেখে চালাতে হবে’।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নৌবাহিনী জানায়, এই স্ট্রাইক গ্রুপটি ১১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের দায়িত্বরত এলাকায় প্রবেশ করেছে।

এই স্ট্রাইক গ্রুপে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডসহ নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডেস্ট্রয়ার ও অন্য বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধজাহাজ আছে। এই রণতরী বহরের মধ্যে শুধু ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডেই চার হাজারের বেশি সৈন্য আছে ও অনেকগুলো যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার আছে।

পেন্টগনের মুখপাত্র শন পার্নেল বলেছেন, “এই বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি ব্যাহত করে এমন বেআইনি কাজে জড়িত ব্যক্তি ও বেইআইনি কার্যকলাপ শনাক্ত, পর্যবেক্ষণ ও রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা জোরদার করবে।”

এর ওই অঞ্চলে ‘মাদক পাচার’ ও অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এই বিমানবাহী রণতরী বহর হাজির হওয়ার আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগর অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য শক্তি মোতায়েন করেছে। ইতোমধ্যেই সেখানে কয়েক হাজার সেনা, নিউক্লিয়ার শক্তি চালিত ডুবোজাহাজ, এক ডজনেরও বেশি যুদ্ধজাহাজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে থাকা দ্বীপ পুয়ের্তো রিকোর সামরিক ঘাঁটিতে অনেকগুলো অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে।

সব মিলিয়ে কয়েক দশকের মধ্যে এটি লাতিন আমেরিকার আশপাশে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: