ফাইল ছবি
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে ১০০ কোটি ডলারের মানহানি মামলা করার হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে হামলার আগমুহূর্তে ট্রাম্প সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছিলেন—এমন ভুল ধারণা তৈরি করার মতো তাঁর ভাষণ সম্পাদনা করায় বিবিসি গতকাল সোমবার ক্ষমা চাওয়ার পর বিষয়টি সামনে এল।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে—ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে ১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হওয়ায় গত রোববার বিবিসির শীর্ষ দুই কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, ব্রিটিশ এই সম্প্রচার সংস্থাকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালের ওই ডকুমেন্টারি প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাওয়ার জন্য। এটি প্রচারিত হয়েছিল ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এর আগে গণমাধ্যমকে চুপ করাতে মামলা করার অভিযোগ উঠেছিল। তবে সাম্প্রতিক এই বিতর্ক আবারও আলোচনায় এনেছে বিবিসিকে। দীর্ঘদিন ধরে সংবাদমাধ্যমটিকে অনেকে ভালোবাসেন, আবার অনেকে পক্ষপাতের অভিযোগেও অভিযুক্ত করেন।
ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী দলের মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, বিবিসিকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি এএফপিকে বলেন, বিবিসি ইচ্ছাকৃতভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য বিকৃত করেছে, যাতে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের জবাবদিহির আওতায় আনবেন, যারা মিথ্যা, প্রতারণা ও ভুয়া খবর ছড়ায়।
এ বিষয়ে বিবিসির এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা চিঠিটি পর্যালোচনা করব এবং যথা সময়ে সরাসরি জবাব দেব।’
এদিকে, বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ ব্রিটিশ এমপিদের উদ্দেশে পাঠানো এক চিঠিতে স্বীকার করেছেন, ট্রাম্পের বক্তব্যের সম্পাদনা এমন ধারণা সৃষ্টি করেছে যেন তিনি সরাসরি সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বিবিসি এই ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা চায়।’ এ সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, পুরো বিষয়টিকে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ তদারকি ব্যবস্থায় সংস্কার আনা হবে।
গত রোববার তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি ও নিউজ বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেন। ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিবিসির সাংবাদিকদের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ ও ‘অসৎ’ বলে আখ্যা দেন। তাঁর প্রেস সচিব বিবিসিকে বলেন, শতভাগ ভুয়া খবর প্রচারকারী।
তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ভুয়া তথ্যের যুগে বিবিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি আরও বলেন, বিশ্বাস ধরে রাখতে হলে বিবিসির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি এবং ভুল হলে তা সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: