
হোয়াইট হাউসের এক বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়ার পর, ডনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করার জন্য নতুন এক উপায় বের করেছেন। ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলকে এমনভাবে বিভক্ত করা যাতে এর বেশিরভাগ অংশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
রবিবার এয়ার ফোর্স১ বিমানে ট্রাম্পকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেখানেই তিনি ডনবাস অঞ্চলটি ভাগ করে নেয়ার কথা বলেছেন। তার কথায়, ‘‘অঞ্চলটি এখন যেমন আছে, তেমনভাবে ভাগ করে দেয়া হোক। এখন তো ভাগ হয়েই আছে। যেমন আছে, তেমন ভাবেই ছেড়ে দিক ওরা।’
একইসঙ্গে ট্রাম্পের পরামর্শ, ‘পরে আলোচনার মাধ্যমে এ নিয়ে ওরা সমঝোতা করে নিতে পারে। কিন্তু আপাতত, উভয় পক্ষেরই যুদ্ধ থামানো উচিত -আপনারা বাসায় ফিরে যান, লড়াই বন্ধ করুন, মানুষ হত্যা বন্ধ করুন’।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সাথে এক উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকের পর ট্রাম্পের এই মন্তব্য এসেছে। ডনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত ডনবাস ভৌগোলিক দিক থেকে ইউক্রেনের অংশ হলেও দীর্ঘ দিন ধরে এর উপরে নজর রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। এটি ইউক্রেনের জনপ্রিয় শিল্প-শক্তি কেন্দ্র। ফলে অর্থনীতির দিক থেকেও এর গুরুত্ব রয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এই অঞ্চলে আধিপত্য খাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া।
২০২২ সালে পুতিনের বাহিনী যখন ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল, এই ডনবাস অঞ্চলের অধিকাংশই দখল করে নেয়। এখনও ডনবাসের অধিকাংশ রাশিয়ার দখলে রয়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী যদি এখনকার অবস্থানেই ডনবাসকে ভাগ করে দেয়া হয়, তবে অধিকাংশ থাকবে রাশিয়ার ভাগে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আদৌ তা মেনে নেবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
দুটি সূত্রের ধারণা ছিল, ট্রাম্প বৃহস্পতিবার পুতিনের সাথে যে ফোনালাপ করেছিলেন তাতে প্রভাবিত হয়েছিলেন। ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, পুতিন একটি আঞ্চলিক বিনিময়ের প্রস্তাব করেছিলেন যেখানে ইউক্রেন দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চল ছেড়ে দেবে এবং বিনিময়ে রাশিয়া জাপোরিঝিয়া এবং খেরসনের ছোট অংশ থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ তাদের মধ্যে ছিলেন যারা সবচেয়ে আক্রমণাত্মকভাবে ইউক্রেনীয়দের ‘ভূমি বিনিময়’ করার প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজের এক সাক্ষাৎকারে পুতিন কি ইউক্রেন থেকে কিছু না নিয়েই যুদ্ধ শেষ করবেন কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প উত্তর দেন, ‘তিনি (পুতিন) কিছু একটা নেবেন।’
প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি ইউরোপীয় এবং আমেরিকান মিত্রদের কাছ থেকে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ইউরোপ-নেতৃত্বাধীন জোট-এর মধ্যে আরেকটি বৈঠকের সময় এসেছে।
রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় জেলেনস্কি লিখেছেন, ‘ইউক্রেন কখনই সন্ত্রাসীদের তাদের অপরাধের জন্য কোনও পুরষ্কার দেবে না এবং আমরা আমাদের অংশীদারদের উপর বিশ্বাস করি। আমরা জানি তারা তাদের অবস্থান থেকে সরবে না।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: