আদানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ, এসইসি-এর অভিযোগ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৪৪

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে আদালতে বিচার চলছে ভারতীয় কনগ্লোমারেট আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বিশ্বের অন্যতম ধনী গৌতম আদানির। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারত সরকারের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি বাগিয়েছেন। কিন্তু এবার নতুন অভিযোগ উঠেছে যে ভারত এই মামলায় কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করছে না।

গত শুক্রবার আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) অভিযোগ করেছে, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও সমন পৌঁছে দিতে সহায়তা করতে ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কমিশন আদানির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সিকিউরিটি জালিয়াতি এবং ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষস্ক্যান্ডালের তদন্ত করছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায়, স্টেট রেগুলেটর বারবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছে।

২০২৪ সালে ব্রুকলিনের প্রসিকিউটরেরা আদানি গ্রুপকে ভারতীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে আদানি গ্রিন এনার্জির উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য করার অভিযোগে অভিযুক্ত করে। এসইসির অভিযোগে বলা হয়েছে, যে ভারতীয় কর্মকর্তারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁরা পরে বিনিয়োগকারীদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছিল।

আইন অনুযায়ী, কোনো সংস্থা যদি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করে এবং তাদের কার্যক্রম আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট নির্বাহীদের বিরুদ্ধে বিদেশি ঘুষের অভিযোগ আনা সম্ভব। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে যে আদানি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করার জন্য ঘুষ লুকানোর চেষ্টা করেছেন।

এ বিষয়ে ভারতের আইন ও ন্যায় মন্ত্রণালয় এবং আদানি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো উত্তর পায়নি রয়টার্স।

তবে আদানি গ্রুপ এসইসির অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছে। অভিযোগ খারিজ করার জন্য ‘সম্ভাব্য সব আইনি ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আদানি গ্রিন এনার্জি এই অভিযোগসমূহ পুনঃপর্যালোচনার জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত আইনি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়।

গত শুক্রবার এসইসি নিউইয়র্ক জেলা আদালতে জানিয়েছে, তারা আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি এবং তাঁর ভাতিজা সাগর আদানিকে আইনি নথি পাঠানোর জন্য বারবার ভারতের আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু নথি পাঠানো হয়েছে কি না এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

এসইসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এসইসি ভারতের আইন ও ন্যায় মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে এবং হেগ সার্ভিস কনভেনশনের মাধ্যমে অভিযুক্তদের নথি পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটরেরা সাগর আদানি, গৌতম আদানি এবং আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের একটি দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি পেতে এই অর্থ দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে ২০ বছরে ২ বিলিয়ন ডলার মুনাফার আশা করেছিলেন তাঁরা।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: