রাশিয়াকে চাপে ফেলতে ট্রাম্পের নতুন চাল

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৯

ছবি : গ্রাফিক্স ছবি : গ্রাফিক্স

চীন ও ভারতের ওপর সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠকে এ দাবি তোলেন ট্রাম্প।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ দিতে এই দাবির কথা জানান ট্রাম্প। ওই বৈঠকে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানোর বিভিন্ন পথ নিয়ে আলোচনা হয়।

ট্রাম্প বর্তমানে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তিচুক্তি করাতে হিমশিম খাচ্ছেন, এমন সময়ে এ প্রস্তাবের কথা বরেন ট্রাম্প। এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা আরো তীব্র হচ্ছে। অন্যদিকে, মঙ্গলবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি এই সপ্তাহ বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন।

গত সপ্তাহের শেষে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের প্রধান সরকারি ভবনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।

যা ছিল একটি প্রতীকী আক্রমণ এবং ক্রেমলিনের আগ্রাসনের বড় ধরনের ইঙ্গিত। একই সময়ে বেড়েছে ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা। ইউক্রেন বলেছে, রুশ বাহিনী অন্তত ৮১০টি ড্রোন ও ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চলে পেনশন সংগ্রহের লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ মানুষের ওপর রুশ গ্লাইড বোমা হামলায় ২০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

ট্রাম্প ওই বোমা হামলার পর সাংবাদিকদের জানান, তিনি পুরো পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন এবং ক্রেমলিনের ওপর আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন।

প্রেসিডেন্ট এর আগে একাধিকবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে, পুতিন তার আল্টিমেটাম ও নিষেধাজ্ঞার হুমকি উপেক্ষা করলেও এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত মাসে আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিনের বহুল প্রত্যাশিত বৈঠক কোনো শান্তিচুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছিল।

অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ওয়াশিংটন অর্থনৈতিক চাপ আরো বাড়াতে প্রস্তুত, তবে এর জন্য ইউরোপের শক্তিশালী সমর্থন প্রয়োজন।

একই দিনে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলাপে বসবেন এবং আলোচনার সফল সমাপ্তির আশা করছেন বলে ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে জানিয়েছেন।
ট্রাম্পের পোস্টের জবাবে মোদি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, দুই দেশ ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং স্বাভাবিক অংশীদার’। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দলগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আলোচনাগুলো শেষ করার জন্য কাজ করছে। আমিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছি।’

উল্লেখ্য, চীন ও ভারত রাশিয়ান তেলের বড় ক্রেতা, যা রাশিয়ার অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের লেনদেনের কারণে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত জরিমানাও ছিল।

অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়েছে, তারা রাশিয়ান জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে। তবুও বর্তমানে তাদের প্রায় ১৯ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি রাশিয়া থেকেই আসে। যদি ইইউ সত্যিই চীন ও ভারতের ওপর এ শুল্ক আরোপ করে, তবে এটি হবে তাদের কৌশলের বড় পরিবর্তন। যেখানে এতদিন তারা মূলত রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে নিষেধাজ্ঞার পথ বেছে নিয়েছিল, বাণিজ্য শুল্ক নয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: