
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক ইঙ্গিত দিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তাল মেলাতে তাঁর প্রতিষ্ঠান আরও বেশি খরচ করতে প্রস্তুত। এ ক্ষেত্রে অ্যাপল নতুন ডেটা সেন্টার নির্মাণ অথবা এই খাতে বড় কোনো কোম্পানি অধিগ্রহণের পথে হাঁটতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপলের এক অনুষ্ঠানে টিম কুক এআই খাতে আরও বেশি বিনিয়োগের ইঙ্গিত দেন। অ্যাপলের দীর্ঘদিনের মিতব্যয়ী নীতির বড় এক ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা হচ্ছে একে।
মাইক্রোসফট ও অ্যালফাবেটের গুগলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অ্যাপলকে। ইতিমধ্যে মাইক্রোসফট ও গুগলের তৈরি এআই-চালিত চ্যাটবট ও ভার্চ্যুয়াল সহকারী ব্যবহার করছেন লাখো ব্যবহারকারী। তবে এই প্রবৃদ্ধির পেছনে ব্যাপক খরচ করেছে দুটি প্রতিষ্ঠান।
গুগল আগামী এক বছরে ৮৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনা করছে এবং মাইক্রোসফট ডেটা সেন্টারের পেছনে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করার কথা জানিয়েছে। অ্যাপল এর বিপরীতে কিছু ক্লাউড কম্পিউটিং কাজ পরিচালনার জন্য বাইরের ডেটা সেন্টার প্রদানকারীদের ওপর নির্ভর করেছে।
এ ছাড়া অ্যাপলের আইফোনের নির্দিষ্ট কিছু ফিচারের জন্য চ্যাটজিপিটি নির্মাতা ওপেনএআইয়ের সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে। এর পাশাপাশি অ্যাপল তাদের অধিকাংশ এআই প্রযুক্তি নিজস্বভাবে বিকাশের চেষ্টা করছে- এর মধ্যে রয়েছে ভার্চ্যুয়াল সহকারী সিরির উন্নয়নও। তবে এর ফলাফল এখনো আশাব্যঞ্জক হয়নি। অ্যাপল তাদের ভার্চ্যুয়াল সহকারী সিরির উন্নত সংস্করণ আগামী বছর পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছে।
অ্যাপলের তৃতীয় প্রান্তিকের আয়-ব্যয়ের হিসাবের সময় এক সম্মেলনে বিশ্লেষকেরা বলেন, ইতিহাসে অ্যাপল বড় কোনো চুক্তি খুব কমই করেছে। তাঁরা জানতে চান, এআই লক্ষ্য পূরণে অ্যাপল এবার কি ভিন্ন কোনো কৌশল নিতে পারে? জবাবে টিম কুক জানান, এ বছর অ্যাপল ইতিমধ্যে সাতটি ছোট প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করেছে এবং প্রয়োজনে বড় প্রতিষ্ঠান কিনতেও প্রস্তুত।
অ্যাপল সাধারণত ছোট ছোট প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করে, যাদের বিশেষায়িত নির্দিষ্ট পণ্য তৈরি ও উন্নয়নের জন্য কারিগরি দল থাকে। অ্যাপলের সবচেয়ে বড় অধিগ্রহণ ছিল ২০১৪ সালে বিটস ইলেকট্রনিকস কিনে নেওয়া, যার মূল্য ছিল ৩ বিলিয়ন ডলার। এরপর ইন্টেলের কাছ থেকে মডেম চিপ ব্যবসা কিনতে ১ বিলিয়ন ডলার খরচ করে।
কিন্তু এখন অ্যাপল এক ব্যতিক্রমী সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এটি অ্যাপলের জন্য এমন এক সময়, যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বড় বিনিয়োগ ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। অ্যাপলের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা কেভান পারেখ নির্দিষ্ট করে কোনো বাজেটের পরিমাণ উল্লেখ না করলেও বলেন, এআই খাতে খরচ বাড়াতে প্রস্তুত অ্যাপল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: