গুয়ানতানামোর ৩ বন্দীকে ফেরত পাঠাল কারাগার কর্তৃপক্ষ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:০৯

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে দুই মালয়েশিয়ান ও এক কেনিয়ান নাগরিকসহ তিন বন্দীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গতকাল পেন্টাগন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এই ঘটনার পর দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেওয়া পদক্ষেপ পুনরায় আলোচনায় এসেছে।

লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামিয়ার (জেআই) সদস্য মালয়েশিয়ান নাগরিক মোহাম্মদ ফারিক বিন আমিন ও মোহাম্মদ নাজির বিন লেপকে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ২০১৮ সালে দোষ স্বীকার করার পর, তাঁরা পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের জন্য মালয়েশিয়ায় স্থানান্তরিত হচ্ছেন।

পেন্টাগনের একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রতিরক্ষা সচিব লিয়ড অস্টিন কংগ্রেসকে এই বিষয়টি জানিয়েছেন। এরপর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মালয়েশিয়ার যৌথ আলোচনা ও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে বন্দীদের নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে।

২০০৩ সালে থাইল্যান্ডে গ্রেপ্তার হওয়া এই দুই ব্যক্তি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আল-কায়েদা শাখার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ ছাড়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামিয়া পরিচালিত বেশ কয়েকটি বোমা হামলায় এ দুজনের সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, গত মঙ্গলবার কেনিয়ার নাগরিক মোহাম্মদ আব্দুল মালিক বাজাবুকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাজাবু আল-কায়েদার পূর্ব আফ্রিকান শাখার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হন। পেন্টাগন জানিয়েছে, ‘নিম্ন স্তরের প্রশিক্ষণ ও নেতৃত্বের ভূমিকা না থাকা’, পারিবারিক সম্পৃক্ততা না থাকা ও সুন্দর ব্যবহার বিবেচনায় বাজাবুকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রশাসনিক জটিলতা ও কূটনৈতিক সমঝোতার অভাবে এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। ৯ / ১১ টুইন টাওয়ারে হামলার পর সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের আটক করার জন্য স্থাপিত এই কারাগারটি যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে কারাগারে ১২ জন বন্দী রয়েছেন। এদের মধ্যে সাতজন সামরিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় আছেন। ৯ / ১১ হামলার পরিকল্পনাকারী খালিদ শেখ মোহাম্মদও এই তালিকায় রয়েছেন। তবে এই বিচার প্রক্রিয়াটি বিলম্ব হচ্ছে। কারণ নির্যাতনের মাধ্যমে ‘ব্ল্যাক সাইট’ কারাগার থেকে প্রাপ্ত সিআইএ’র তথাকথিত প্রমাণ আদালতে অগ্রহণযোগ্য।

গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধ করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে বন্দীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো বা তৃতীয় কোনো দেশে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং কূটনৈতিক জটিলতার কারণে ইয়েমেনি বন্দীদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে।

এ পর্যন্ত প্রায় দুই ডজন বন্দী স্থানান্তরিত হলেও, বাইডেনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে (২০ জানুয়ারি) বাকি ১৫ জনের স্থানান্তর সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: