জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় গোপন নথিপত্র অনুমোদন ছাড়াই ফ্লোরিডায় নিজের বাড়িতে নিয়ে অরক্ষিত স্থানে ফেলে রাখার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আর একারণে শনিবার দুটো নির্বাচনী সভায় দেশের বিচার দপ্তরকে কঠোর ভাষায় গালমন্দ করেছেন তিনি । খবর বিবিসি।
৯ জুন, শুক্রবার দায়ের করা ৩৭ দফা অভিযোগ-নামার মূল কথা হলো স্পর্শকাতর বিভিন্ন সরকারি নথি নিয়ে হেলাফেলা করে তিনি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলেছেন এবং এ ঘটনার তদন্তে তিনি বাধা দিয়েছেন।
তবে ট্রাম্প বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ নিতান্তই ‘হাস্যকর’ এবং ‘ভিত্তিহীন’। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার দপ্তর এবং কেন্দ্রীয় দপ্তরকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত এফবিআই ও বিচার দপ্তরের এসব অভিযোগ নির্বাচনে হস্তক্ষেপের সামিল ‘ এবং তিনি কোনো অপরাধ করেননি বলেও মন্তব্য করেন।
২০২৪ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প এবং মনে করা হচ্ছে প্রার্থী নির্বাচনের দৌড়ে তিনিই এগিয়ে রয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র এবং সামরিক পরিকল্পনা সহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর নথিপত্র তার ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোর বাড়িতে নিয়ে বাথরুম এবং বলরুমের মত অরক্ষিত জায়গায় রেখে দিয়েছিলেন। এই প্রথম কোনো আমেরিকার সাবেক কোনো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার অপরাধের মামলা করছে।
জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলাইনায় শনিবার ঘন্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ভাষণ দেন। সেসময় ট্রাম্প বলেন, ‘বন্দুক তাক করা এফবিআই এজেন্টরা মার-আর-লাগোতে তল্লাশি চালায়।'
জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান দলের সম্মেলনে ভাষণে তিনি বলেন, ‘তারা প্রতারণা করছে, তারা প্রতারক, দুর্নীতিবাজ – এসব অপরাধীদের কোনোভাবেই পুরস্কৃত করা যাবেনা, তাদের হারাতে হবেই।' বাইডেন সরকার তাকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই অভিযোগকে তিনি ‘দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ধাপ্পাবাজি বলে বর্ণনা করে বলেন এসব অভিযোগ নেহাতই পরিহাস।' সভাগুলোতে আগত তার সমর্থকদের তিনি ‘দেশপ্রেমী বলে প্রশংসা করে বলেন ‘অশুভ শক্তি এখন দেশ চালাচ্ছে।'
নিজের ক্ষমতাকালকে ‘সবচেয়ে সফল সময় বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানের ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক শক্তির মুখোমুখি দাঁড়াবো...যে কাজ শুরু করেছি তা শেষ করবো।' সেসময় মানুষজন ‘ইউএসএ, ইউএসএ ' বলে স্লোগান দিতে থাকে।
‘আমি কখনই নতি স্বীকার করবো না, পিছু হটবো না' বলেন ট্রাম্প। তারা তার পেছনে লেগেছে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এদের মধ্যে রয়েছে মার্কসিস্ট, কম্যুনিস্ট, কট্টরপন্থী পরিবেশবাদী আর সেসব মানুষ যারা - তার মতে - আমেরিকার সীমান্ত খুলে দিলে চায়।'
বিচার দপ্তরের নিয়োগ করা যে কৌঁসুলি তদন্তে নেতৃত্ব দেন, সেই জ্যাক স্মিথ জোর দিয়ে বলেন তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে একাজ করেননি। ‘এদেশে আইন একটাই এবং সবার জন্যই তা প্রযোজ্য।'
তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা বিষয়ক তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যেসব আইন রয়েছে সেগুলো অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে।
সূত্র : বিবিসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: