ক্যালিফোর্নিয়ার একটি বায়োটেকনোলজি ফার্মে বোমা হামলার ঘটনায় ২০০৯ সাল থেকে এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী তালিকায় থাকা ডেনিয়েল আন্দ্রেয়াস সান দিয়েগোকে যুক্তরাজ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার এফবিআই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আটক ডেনিয়েল ‘চরমপন্থী প্রাণী অধিকার কর্মী’ হিসেবে পরিচিত। প্রাণীদের অধিকার রক্ষার জন্য অত্যন্ত চরম ও সহিংস পন্থা অবলম্বন করতেন তিনি।
এফবিআই এবং ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি, কাউন্টার টেররিজম পুলিশিং ও নর্থ ওয়েলস পুলিশের যৌথ অভিযানে ২৫ নভেম্বর ওয়েলস থেকে ডেনিয়েল আন্দ্রেয়াস সান দিয়েগোকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০০৩ সালের আগস্টে ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডের কাছে বায়োটেকনোলজি ফার্ম চিরন ইনকরপোরেটেডে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সান দিয়েগোকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। সেখানে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয় আর অন্য একটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, সান দিয়েগো এক মাস পরে ক্যালিফোর্নিয়ার আরেকটি প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় বোমা পেতেছিলেন। তবে এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানায় এফবিআই।
‘রেভোলিউশনারি সেলস’ নামে একটি জোট প্রাণী অধিকার সংগঠনের একটি ওয়েবসাইটে বিবৃতিতে ওই হামলার দায় স্বীকার করে। তারা দাবি করে, তাদের হামলা চালানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ব্রিটিশ বায়োটেকনোলজি কোম্পানি হান্টিংডন লাইফ সায়েন্সেসের সম্পর্ক ছিল। এই কোম্পানিটি ইঁদুর, তোতা, খরগোশসহ বিভিন্ন প্রাণীর ওপর ওষুধ পরীক্ষা করত। প্রাণী অধিকার কর্মীদের তীব্র সমালোচনার মুখে ছিল তারা। পরে কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করে ইনোটিভ কোম্পানি। পরবর্তীতে প্রাণী অধিকার আন্দোলনের সমালোচনা ও চাপের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠান এই ধরনের গবেষণা ও পরীক্ষার প্রতি আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে।
২০০৪ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল গ্র্যান্ড জুরি সান দিয়েগোর বিরুদ্ধে দুটি বোমা বিস্ফোরণ পরিকল্পনার অভিযোগ আনে। এ ছাড়া, তাঁর বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক ডিভাইস ব্যবহার করে সহিংস অপরাধ সংঘটনের দুটি অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এফবিআই জানায়, প্রাণী অধিকার আন্দোলনকারী ডেনিয়েল সান দিয়েগো প্রাণী অধিকার নিশ্চিতে প্রয়োজনে সহিংসতা এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করাকে যৌক্তিক উপায় হিসেবে দেখতেন। প্রাণী অধিকার আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনে সহিংসতার পথ নেবেন বলে সান দিয়েগো প্রকাশ্যেই বলেছিলেন।
এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে বলেন, ‘এই গ্রেপ্তার এটাই প্রমাণ করে যে, অপরাধী যতই পালিয়ে বেড়াক না কেন, এফবিআই তাঁদের খুঁজে বের করবেই। আমাদের দেশে আপনার মতামত প্রকাশ করার একটি সঠিক উপায় এবং একটি ভুল উপায় আছে। সহিংসতা ও সম্পত্তি ধ্বংস করা কখনো সঠিক উপায় নয়।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: