ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানরা নতুন ট্রাম্প প্রশাসন ও কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন, যাতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সম্প্রদায়টির এক প্রভাবশালী নেতা এ কথা বলেছেন বলে পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতীয় একটি মাধ্যম শনিবার জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ভারতীয়-আমেরিকান চিকিৎসক ড. ভারত বড়াই। পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন ও মন্দির ভাঙচুরের বিষয়ে সাহসী বক্তব্য দিয়েছেন।
তিনি একজন সাহসী ব্যক্তি। যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে তিনি হয়তো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথাও বিবেচনা করবেন।’
ওয়াশিংটনে ক্যাপিটলে আয়োজিত বার্ষিক দীপাবলি উদযাপনে যোগ দিতে গিয়ে বড়াই এই মন্তব্য করেন। এই অনুষ্ঠানে অনেক আইন প্রণেতা ও সারা দেশ থেকে ভারতীয়-আমেরিকানরা অংশ নেন।
তিনি জানান, সম্প্রদায়ের সদস্যরা নতুন প্রশাসন ও কংগ্রেসের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন, যাতে বাংলাদেশের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি ও সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায়।
তিনি আরো বলেন, ‘তাদের পোশাক রপ্তানি, যা তাদের ব্যবসার ৮০ শতাংশ জোগায়, যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ কী খাবে?’
বড়াই অভিযোগ করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার মূলত সামরিক বাহিনী পরিচালিত। তিনি বলেন, ‘আসলে দেশের নিয়ন্ত্রণ সামরিক বাহিনীর হাতে।’
এ ছাড়া বড়াই আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের চাপ বাংলাদেশকে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করার বিষয়ে সচেতন করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা, হিন্দু আমেরিকানরা, কংগ্রেসের কাছেও আবেদন করব, যদি বাংলাদেশ সঠিক পথে না আসে।’
তিনি ভারত সরকারকেও আহ্বান জানান, তারা যেন বাংলাদেশকে এই বিষয়ে সতর্ক করে। তিনি বলেন, ‘যদি তারা হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘুদের হয়রানি চালিয়ে যায়, তাহলে ভারতও তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করুক।’
৫ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনের কয়েক দিন আগে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বাংলাদেশে সহিংসতায় আক্রান্ত হিন্দুদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বর্বর হামলার আমি তীব্র নিন্দা জানাই। বাংলাদেশ এখন চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার আমলে এটি কখনো ঘটত না। কমলা (হ্যারিস) ও জো (বাইডেন) সারা বিশ্বে ও যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দুদের উপেক্ষা করেছেন। তারা ইসরায়েল থেকে ইউক্রেন পর্যন্ত এবং আমাদের দক্ষিণ সীমান্ত পর্যন্ত সর্বত্র ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে আবার শক্তিশালী করব এবং শান্তি ফিরিয়ে আনব। আমরা হিন্দু আমেরিকানদের রক্ষা করব ও চরমপন্থী বামদের ধর্মবিরোধী এজেন্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করব। আমরা আপনার স্বাধীনতার জন্য লড়ব। আমার প্রশাসনের অধীনে এটাই হবে।’
ড. বড়াই আরো বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার উৎখাতের পেছনে বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে অনেকে আলোচনা করছেন। ‘এমনকি মুসলিমদের মধ্যেও এখন বিভক্তি রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন ডেমোক্র্যাটরা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দেশে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: